ফকির উয়ায়ছী:
ধর্ম মন্ত্রনালয়, ইসলামী ফাউন্ডেশন সে সাথে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। আমাদের বাংলাদেশে আনুমানিক ৯৭% মুসলমান বিধায় রাছুল সা. এর সম্মানার্থে একমত হওয়ার বিষয়ে সরকারী মহলের বিধি বিধান করা জরুরী। বাংঙ্গালী জাতির জন্য পতাকা উড়ানোর একটি বিধান আছে। এমনকি ব্যতীক্রম ব্যবহারে শাস্তির বিধানও রয়েছে। এই প্রেক্ষাপট থেকে রাছুল সা. এর সম্মান প্রদর্শনের একটি নীতিমালা মুসলমানদের মধ্যে বাধ্যতা মুলক থাকলে আলেমগনের মধ্যে মতভেদ কিছুটা কমে যেত।
এই ব্যপারটি আপনাদের দৃষ্টি গোচরের কারণ হচ্ছে মাস খানেকের মধ্যেই রাছুল সা. সম্মান প্রদর্শন নিয়ে বাহাসের সৃষ্টি হয়েছে। কিছুদিন আগে ইশ্বরগঞ্জে আর গত ১৮-১২-২০১৫ইং তারিখে চাদপুরে। মিলাদে দাড়িয়ে রাছুল সা.কে সালাম দেওয়া প্রসঙ্গে।
মিলাদ শব্দটির সাথে কিয়াম শব্দটিও ওতোপ্রত ভাবে জড়িয়ে আছে। যেমন আমরা সচারচর বলে থাকি নামায/কালাম- নামায/রোযা ইত্যাদি। মিলাদ শব্দের অর্থ হচ্ছে জন্মবৃত্তান্ত আর কিয়াম শব্দটির অর্থ হচ্ছে দাড়ানো। আমরা মুসলমানগন মিলাদ কিয়াম শুধু রাছুল সা. এর জন্যই পালন করে থাকি।
দাড়িয়ে সালাম দেওয়ার বিপক্ষের আলেমগন বলেন মিলাদ কিয়াম করা যাবে দাড়িয়ে নয় বসে। যেহেতু রাছুল সা. সামনে নাই সেহেতু তিঁনাকে দাড়িয়ে সালাম দেওয়া বেদাৎ এমনকি এই দলের লোকদের মধ্যে কিছু কিছু বলছেন মিলাদ করাই যোবে না।
দাড়িয়ে সালাম দেওয়ার পক্ষের আলেমগন বলছেন নবীকে বসে সালাম দেওয়া সেটা বেয়াদবির সামিল এটা বেদাৎ নয়।
আমি অল্প বুদ্ধির নির্বোধ মানুষ হওয়া সত্ত্বেও কিছু কথা উল্লেখ করছি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় দৃষ্টি দিলে এটার সুন্দর একটা সমাধান আসবে বলেই বিশ্বাস। যেহেতু কিছুদিন আগে চেয়ারে বসে নামায আদায় নিয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রি নিজেও সংসদে আলোচনা করেছিলেন। এই প্রসঙ্গে যদি দৃষ্টি দিয়ে স্থায়ী ব্যবস্থা করার আদেশ দিতেন কৃতজ্ঞ হবো। আমার মতামত গুলি নিন্মে উল্লেখ করছি।
১/ সূরা আহযাবের:৫৬# “আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের তরে দোয়া কর এবং তাঁর প্রতি সালাম প্রেরণ কর।” আল্লা যে কাজ নবীর প্রতি করেন সেকাজ কিভাবে বসে আদায় করতে পারি?
২/ হাদিসে পাওয়া যায় “তোমরা তোমাদের নেতাদের জন্য দাড়াও”।
আমি কয়েকটি বিষয় আলোচনায় আনতে চাচ্ছি সেটি হচ্ছে। মিলাদ/ কিয়াম হিসাবেই পরিচিত বাক্যটি। কিয়াম শব্দটির বাংলা অর্থ যেহেতু ‘দাড়ানো’ তবে বসে বসে কিয়াম কিভাবে করা যায় বিজ্ঞ আলেম সাহেবদের কাছে জানার আগ্রহ রাখি!
আমি মিলাদ কিয়ামের দাড়িয়ে করার পক্ষ নিয়ে কিছু প্রশ্ন রাখতে চাই বিপক্ষের আলেমদের কাছে যেহেতু রাছুল সা. বিশ্ব নবী এবং আমাদের সাক্ষ্যদাতা। তিঁনাকে সম্মান প্রদর্শনে মতভেদ কোন জ্ঞান সম্মত আলেম করতে পারে কি?
১/ কোন পদস্ত লোক সামনে এলে দাড়িয়ে যেতে হয়। এটাই আদব, ভদ্রতা।
২/ জাতিয় সংঙ্গীতের সময় কেন দাড়িয়ে যান পতাকার সামনে। সেটা একটি বস্তু মাত্র। আর আল্লা বলেছেন আমার নবী হায়াতুন নবী।
৩/ রাছুল সা. এর সম্মানে দাড়ানোই যদি বেদাত হয়। খুতবার সময় মিম্বরের ৩ নাম্বার সিরিতে দাড়ান কেন? প্রথম এবং দ্বিতীয় সিরিতে কাদের সম্মানে খালি ছাড়েন? প্রথম সিড়ি না হয় রাছুল সা. এর সম্মানে সুন্নত পালন ২য় সিড়ি ছাড়া হয় কার সম্মানের? কার সুন্নত।
সমস্ত বিষয় বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি যে অনতি বিলম্বে এই ব্যপারে একটি প্রঙ্গাপন জারীর মাধম্যে বাংলাদেশের সমস্ত মসজিদ গুলিকে একই আইন মেনে চলার জন্য আদেশ এবং রাছুল সা. এর সম্মানের কথা বিবেচনায় রেখে মসজিদ গুলিকে সরকারের নিয়ন্ত্রন আনার আশা রাখি। রাছুল সা.কে সম্মান প্রদর্শনে মুসলমানদের মধ্যে কোন বিভেদ যেন না থাকে।