আজঃ বৃহস্পতিবার | ৩০শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
Home / অন্যান্য বিষয়াদী / আল্লার পক্ষ নিবেন নাকি জাকির নায়েকের পক্ষ নিয়ে জাহান্নামী হবেন

আল্লার পক্ষ নিবেন নাকি জাকির নায়েকের পক্ষ নিয়ে জাহান্নামী হবেন

ফকির উয়ায়ছী-Fokir:
আল্লার পক্ষ নিবেন নাকি জাকির নায়েকের পক্ষ? আল্লার বিপক্ষে গিয়ে কোন ব্যক্তির পক্ষ নিলে জাহান্নাম অবধারিত।  জাকির নায়েক সাহেবের ভক্তগনদের কাছে প্রশ্ন আপনারা কোরআনের পক্ষে যাবেন নাকি আল্লার পক্ষে যাবেন। জাকির নায়েক মন গড়া কথা বলে যেতে পারছে কারণ তার অনুসারীরা নিজ্ব চোখ বন্ধ রেখে কানে শুনা কথাতেই বিশ্বাস করছেন। এই সকল অর্বাচীনদের দল আল্লার লানত থেকে রেহাই পাবে না। নিন্মউক্ত ইউ টিউব থেকে লিঙ্কটিতে ২টি প্রশ্ন আছে একটি হচ্ছে হুর বিষয়েসেটার উত্তরে আমি সহমত পোষন করি। আর মেয়েদের স্বাক্ষী সম্পর্কিত আল্লার আয়াত এবং জাকির নায়েকের মনগড়া ব্যাখ্যার সাথে আল্লার কোরআন দিয়ে বিবেচনা করলে একমত পৌষন করা যায় না। আমি লিঙ্কটি উল্লেখ করছি নিন্মে সে সাথে কোরআন আয়াত দিচ্ছি বিবেচনা করে দেখবেন কোনটি গ্রহন যোগ্য। আর আল্লা যাদের চোখ, কান, অন্তর করণ সীল মোহর মেরে দিয়েছেন তাদের জন্য কোরআনের আয়াতের মূল্য সাদা কাগজের চেয়ে অধিক নয়।

লিঙ্কটি
https://www.youtube.com/watch?v=jVqsUdmk2Ds

এক ভাই জাকির নায়েককে প্রশ্ন করেছিলেন পুরুষের এক স্বাক্ষী সমান মেয়েদের দুই স্বাক্ষী কেন? তিনি এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় বললেন মনগড়া ভাবে শুধু আর্থিক এবং হত্যাকান্ড বিচারের ক্ষেত্রে এক পুরুষ এবং দুই নারীর স্বাক্ষী সমান। জাকির নায়েক প্রমান করতে চেষ্টা করলেন সূরা নুরের ৬ নং আয়াত দিয়ে কিন্তু সেখানেও তিনি চাতুরতার সহিত কোরআনের আয়াতের পিছনের অংশ বাকী রেখে। যারা তাদের স্ত্রীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে এবং তারা নিজেরা ছাড়া তাদের কোন সাক্ষী না থাকে তবে নিজেদের স্বাক্ষীই যথেষ্ট। কিন্তু “(সে আল্লাহর কসম খেয়ে চারবার সাক্ষ্য দেবে যে, সে অবশ্যই সত্যবাদী)” বন্ধনীর কথাটা উল্লেখই করলেন না। অথচ আল্লা বলেছেন আল্লার কসম করে বলার কথা। অর্থাৎ আল্লাকে স্বাক্ষী করার কথা।

২৪:৬#“যারা তাদের স্ত্রীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে এবং তারা নিজেরা ছাড়া তাদের কোন সাক্ষী নেই, এরূপ ব্যক্তির সাক্ষ্য এভাবে হবে যে, সে আল্লাহর কসম খেয়ে চারবার সাক্ষ্য দেবে যে, সে অবশ্যই সত্যবাদী।”

এই লোকটি মানুষকে তার দিকে টানার জন্য আল্লার কোরআনকেই ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ব্যবহার করেছেন। আল্লা কোরআনে বলেছেন আমার আয়াতের কোন পরিবর্তন নাই। আমার আয়াতের কোন বক্রতা নেই। কিন্তু জাকির নায়েক এই কোরআনের আয়াত অর্থ ক্ষেত্র বিশেষ পরিবর্তন করে চলছেন। তাকে মিডিয়া খুব ফলাও করে প্রচার করে কোরআন বিরোধী জাকির নায়েককে জগৎ বিখ্যাত বানীয়ে ছাড়ছেন। প্রিন্টেড পেপার হলে কাগজ লাগতো সেক্ষেত্রে মিডিয়া চিন্তা করতো। আর চিন্তা করবেই কিভাবে চোখে দেখে ঈমান ওয়ালা মানুষের সংখ্যা বেশী নয় হাজারে ৯৯৯ জনই কান কথায় বিশ্বাস আনা জীব। ওন লাইন পেপার থাকার কারণে মিডিয়া একজন ছাপালেই সত্য মিথ্যা জাচাই না করেই ছেপে চলে কপি করে নিয়ে। তাদের দল ভারী হওয়ার জন্য আল্লার সত্য প্রকাশ করে না। আল্লার কি বলেছেন আয়াতগুলি আমি কোরআন থেকে দিচ্ছি:
২:২৮২# “ঋন গ্রহীতা যেন লেখার বিষয় বলে দেয় এবং সে যেন স্বীয় পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করে এবং লেখার মধ্যে বিন্দুমাত্রও বেশ কম না করে। অতঃপর ঋণগ্রহীতা যদি নির্বোধ হয় কিংবা দূর্বল হয় অথবা নিজে লেখার বিষয়বস্তু বলে দিতে অক্ষম হয়, তবে তার অভিভাবক ন্যায়সঙ্গতভাবে লিখাবে। দুজন সাক্ষী কর, তোমাদের পুরুষদের মধ্যে থেকে। যদি দুজন পুরুষ না হয়, তবে একজন পুরুষ ও দুজন মহিলা।”
৪:১১#“একজন পুরুষের অংশ দু?জন নারীর অংশের সমান।”

সূরা নিসার ১১ আয়াতই প্রমান করে শুধু স্বাক্ষী নয়। একটি ঘটনা উল্লেখ করছি যদি পাঠকগনের চিন্তায় কাজে লাগে।
হযরত ওমরের খেলাফত কালে দুই নারী একই ঘরে সন্তান প্রসব করে একজনের হয় ছেলে সন্তান এক জনের হয় কন্যা সন্তান। উভয় নারী ছেলে সন্তান দ্বাবী করেন। কেউ মেনে নিচ্ছিলেন না কন্যা সন্তানটিকে। বাধ্য হয়ে খলিফা ওমরের কাছে বিচার যায়। খলিফা ওমর বুঝ মত বলেন তাতেও উভয় মহিলা খান্ত হয় না। তখন খলিফা সাহেব বলেন ছেলেটিকে পেট বরাবর কেটে দুই টুকরা করে দাওয়া হবে বলো কে কোন অংশ নিবে? তাতেও কেউ রাজি হয় না। তার পর খলিফা সাহেব বললেন মাথা থেকে খাড়া কবে বারাবর দুই টুকরা করা হলে আর কোন সমস্যা নাই। উভয়ই সমান পাবে। তাতেও কেউ রাজি নয়। শেষ পর্যন্ত উপায় না দেখে বলে হযরত আলী কোথায় ডেকে আনো। মওলা আলী তখন ইহুদির বাগানে পানি দেওয়ার কাজে ব্যস্ত। হযরত আলীকে খলিফা ওমরের কথা জানালে তিঁনি বলেন আমি ইহুদির কাজে চুক্তিবদ্ধ আমি যেতে পারি না। খলিফা ওমরকে এই সংবাদ দিলে নিজেই আসেন। এসে বলে হে আলী এই বিচাবেরর ফয়সালা কি? হযরত আলী উত্তরে বললেন তুমি কি কোরআন পড়ো নাই? তখন খলিফা ওমর বললেন এই বিষয় কি কোরআনে আছে? মওলা আলী  বললেন ছেলে সন্তান জন্মগত ভাবে কন্যাদের দ্বিগুন। এক কাজ করে। দুটি আলাদা পাত্রে উভয় জননীর স্তন থেকে সম পরিমান দুধ নিয়ে ওজন করে দেখ যার দুধের ওজন বেশী ছেলে সন্তানটি তার আর যার দুধের ওজন কম কন্যা সন্তানটি তার। দুই পাল্লায় দুই দুধের পাত্র দিয়ে ওজন করে দেখা গেলো একজনের দুধের ওজন অন্যজনের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন।

এই ঘটনাটির দিকে দৃষ্টি দিয়ে জাকির নায়েক এবং তার অনুসারীদের সত্য উপলদ্ধি করার অনুরোধ জানাচ্ছি। এবং নিন্মের আয়াতগুলি পড়ে বিচার করার অনুরোধ জানাচ্ছি।

৪৮:২৩#“এটাই আল্লাহর রীতি, যা পূর্ব থেকে চালু আছে। তুমি আল্লাহর রীতিতে কোন পরিবর্তন পাবে না।”
৫০:২৯#“আমার কাছে কথা রদবদল হয় না এবং আমি বান্দাদের প্রতি জুলুমকারী নই।”
১৭:৭৭#“আপনার পূর্বে আমি যত রসূল প্রেরণ করেছি, তাদের ক্ষেত্রেও এরূপ নিয়ম ছিল। আপনি আমার নিয়মের কোন ব্যতিক্রম পাবেন না।”
৩৫:৪৩#“আপনি আল্লাহর বিধানে পরিবর্তন পাবেন না এবং আল্লাহর রীতি-নীতিতে কোন রকম বিচ্যুতিও পাবেন না।”
৩৩:৩৫#“যারা পূর্বে অতীত হয়ে গেছে, তাদের ব্যাপারে এটাই ছিল আল্লাহর রীতি। আপনি আল্লাহর রীতিতে কখনও পরিবর্তন পাবেন না।”
৪৮:২৩#“এটাই আল্লাহর রীতি, যা পূর্ব থেকে চালু আছে। তুমি আল্লাহর রীতিতে কোন পরিবর্তন পাবে না।”

উপরোক্ত আয়াতগুলি থাকার পরও জাকির নায়েক সাহেব কিভাবে বলেন কোরআনের আয়াতে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ব্যবহার হবে। তার মস্তিস্ক বিকৃত হয়ে গেছে। তিনি মনে হয় আল্লার ভুল ধরে নিজের এত বড় দল বানাতে চাইছেন যাতে জাহান্নাম ভরেও যেন অবশিষ্ট থাকে। জাকির নায়েক এবং তার অনুসারীদের বলতে চাই আপনারা চিন্তা করবেন না। আল্লার বিরোধীতা করবেন জাকির নায়েকের পক্ষে গিয়ে তবে জাহান্নামেই থাকবেন তারই সাথে তবুও জাহান্নাম খালিই থাকবে।

About Fokir Owaisi

আরও দেখুন

সরণের যুক্তিকতা

ফকির উয়ায়ছী: মানুষের দ্বীন ইসলামের জন্য নিন্মোক্ত ৪:১৩৫ আয়াতটা মেনে চলা অত্যন্ত জরুরী। আখেরাত নিজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *