ফকির উয়ায়ছী:
উম্মতে মুহাম্মদির জন্য ব্যক্তি বিশেষের কথা কতটুকু মুল্যায়িত হতে পারে? সেটাই জ্ঞানীগনদের বিবেচনা করা উচিৎ। বইটি পছন্দের বলেই সতর্ক করার জন্য খন্ডাকারে প্রচার করছি। তবে, আল্লা যাদের মহর মেরে দিয়েছেন তারা আল্লা রাছুল সা. এর কথা উপেক্ষা করে ব্যক্তি বিশেষের কথায় দৌড়াবে। তারা এতই অজ্ঞান আল্লা রাছুল সা. হুকুম অমান্য কররে যে আমল কোন কাজে আসবে না। ইবলিশ তাদের এটাও ভাবতে দেয় না। আল্লা ক্ষমা করুণ আমি এই পথের সংঙ্গী ছিলাম কোন এক সময়।
মসজিদ ব্যবহার সম্পর্কে সতর্কতা
মসজিদ হচ্ছে সেজদার স্থান, নামাজ, জিকির, তেলাওয়াত, ইতিকাফ প্রভৃতি ইবাদতের স্থান। সুতরাং মসজিদকে এসব ইবাদতের জন্যই নির্দিষ্ট রাখা জরুরী কর্তব্য। আর এজন্য কুরআনুল কারীম, হাদিস শরীফ ও নির্ভরযোগ্য ফতুয়ার কিতাবে নির্দেশ এসেছে। সেসব দলিলের আলোকে ৬ উসুলী তাবলীগ জামাতের কর্মীদের মসজিদে রাত্রিতে অথবা দিনে ঘুমানো তথা মসজিদকে বিশ্রামাগার বানানো অবৈধ কাজ। একটি পার্র্টির দলীয় কর্মসূচী পালনে ব্যস্ত এসব লোকের মসজিদে রাতে বা দিনে আরাম করা, ঘুমানো বা বিশ্রাম করা মোটেও শরিয়ত সম্মত নয়। ইতিকাফের নিয়তে মৌখিক দাবী মসজিদ সমূহকে আবাসিক হোটেল বানানো সম্পূর্ণ অবৈধ কাজ। মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার ব্যাপারে আল্লাহ তা’য়ালার নির্দেশ রয়েছে। যেমন আল্লাহ তা’য়ালা এরশাদ করেন,
“আমার গৃহকে পবিত্র রাখ তওয়াফকারীদের জন্যে, নামাযে দণ্ডায়মানদের জন্যে এবং রুকু সেজদাকারীদের জন্যে (সূরা হজ্জ-২৬)।” অন্যত্র আরও এরশাদ করেন-
“আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, অবস্থানকারী ও রুকু সেজদাকারীদের জন্যে পবিত্র রাখ।” (সূরা বাকারা-১২৫)
উপরোক্ত আয়াত শরীফদ্বয়ের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ইবাদতের ঘরকে নামাজ, ইতিকাফ তথা ইবাদতের জন্য পবিত্র রাখতে হবে। কেননা প্রত্যেকটি মসজিদ হলো খানায়ে কাবার প্রতিচ্ছবি। আবাসিক হোটেল বানিয়ে তার পবিত্রতা নষ্ট করা উচিত নয়।
তাবলীগ জামাতের লোকেরা বলে থাকে আমরা যখন মসজিদে প্রবেশ করি তখন সুন্নত ইতিকাফের নিয়ত করি। প্রকৃত পক্ষে তাদের নিয়ত কি সুন্নত ইতিকাফের জন্য? না ৬ উসুলী তাবলীগ প্রচারের জন্য? আল্লাহ সর্বশক্তিমান, তিনি সব কিছুই জানেন। আল্লাহকে ধোঁকা দেওয়া যাবে না। ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে অবস্থান করলে আসর নামাজের পরে বা জোহর নামাজের পরে দাওয়াত দেওয়ার জন্য বের হন কেন? আবার বাজার করতে যান কেন? বাড়ীতে খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য বাজারে মোবাইল করতে যান কেন? ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে ঢুকেন, কিন্তু ইতিকাফ বহির্ভূত কাজও করেন, তাহলে এটা কি ইতিকাফ, না আল্লাহকে ধোঁকা দেয়া? একটা গল্প মনে পড়ে গেল। বাবা ও ছেলে নৌকা চালায়। একদিন নৌকা নিয়ে মাঝ নদীতে আছে। এমন সময় কাল বৈশাখী ঝড় দেখা দিল। বাবা বললো হে আল্লাহ! যদি ঝড় না আসে তাহলে একটি মহিষ দান করবো। সত্যি সত্যিই ঝড় আসলো না। এখন ছেলে বাবাকে ডেকে বলে, বাবা! আমারতো গরীব মানুষ। দিন আনি দিন খাই। মহিষ কেনার টাকা পাব কোথায়? তখন বাবা বললো আরে বোকা! বুঝলি না। আল্লাহ আমাদের ভয় দেখালো আর আমি আল্লাহকে লোভ দেখালাম (নাউযুবিল্লাহ)। তাবলীগ ওয়ালাদের ইতিকাফ হলো এই রকম অর্থাৎ ধোঁকা। যেহেতু ইতিকাফ ছাড়া মসজিদে অবস্থান করা বা রাত কাটানো যাবে না। তাই মসজিদে প্রবেশের সময় ইতিকাফের নিয়ত করে প্রবেশে করে, কিন্তু প্রবেশ করার পর শুরু হয় ওহাবী চক্রান্ত। আরও একটি কথা হলো, সুন্নত ইতিকাফ কখনও দলবদ্ধভাবে হয় না। কিন্তু তাবলীগিরা দলবদ্ধভাবে ইতিকাফ করছে। অনেক সময় রাতে মসজিদে স্বপ্নদোষ হয়ে যায়, ফলে মসজিদের পবিত্রতাও নষ্ট হচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, সাহাবায়ে কেরামগণ ইতিকাফ করতেন নিজের এলাকার মসজিদে। বাড়ী-ঘর রেখে দূর দূরান্তে গিয়ে অন্য এলাকার মসজিদে ইতিকাফ করতেন না। ইলিয়াছি তাবলীগী ভাইয়েরা যে এক জেলা হতে অন্য জেলার মসজিদে ইতিকাফ করতে যান কোন দলিলের প্রেক্ষিতে? নিজের এলাকা বাদ দিয়ে অন্য এলাকার মসজিদে ইতিকাফ করা কি ইসলাম সম্মত? না এটাও ইলিয়াছ মেওয়াতীর স্বপ্নে পাওয়া তাবিজ?
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, রোজা ছাড়া ইতিকাফ হয় না। বিখ্যাত হাদিস গ্রন্থ মুয়াত্তা শরীফের কিতাবুল ইতিকাফ অধ্যায়ে বর্ণিত আছে, “মালেক (র) বলেন তাঁর নিকট খবর পৌঁছিয়াছে যে, কাসিম ইবনে মুহাম্মদ (র) ও আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা) এর মাওলা নাফি’ (র) বলিয়াছেনঃ ইতিকাফ জায়েজ নহে রোজা ব্যতিত, কারণ কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-
“আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ রাত্রির কৃষ্ণ রেখা হতে উষার শুভ্র রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। অতঃপর নিশাগমন পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর। তোমরা মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় তাদের সাথে সঙ্গত হইও না” (সূরা বাকারা-১৮৭)। আল্লাহ তায়ালা ইতকিাফের উল্লেখ করেছেন রোজার সাথে। তাই রোজা ব্যতিত ইতিকাফ হয় না।” (মুয়াত্তা শরীফ, ১ম খন্ড, ইতিকাফ অধ্যায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
আরও একটি বিষয় হচ্ছে রাসূলে কারীম (সা.) কাঁচা পিয়াজ খেয়ে মসজিদের নিকটে যেতে নিষেধ করেছেন। কেননা কাঁচা পেয়াজে দুর্গন্ধ আছে। তাবলীগ জামাতের লোকেরা মসজিদের পাশেই রান্না করেন এবং সেখানেই পিয়াজ কাঁটে। ফলে এর দুর্গন্ধ দ্বারা অন্য মুসল্লিদের কষ্ট হয়, যা কিনা রাসূল (সা.) এর হুকুমের পরিপন্থী। অনেক তাবলীগ জামাতের লোকদেরকে দেখা যায়, মসজিদের ভেতরে বসে কাঁচা পিয়াজ দিয়ে খিচুরী খাচ্ছে। যেখানে নবীজি কাঁচা খেয়ে মসজিদের নিকটে যেতে নিষেধ করেছেন, সেখানে তারা মসজিদের ভেতরেই কাঁচা পিয়াজ খাচ্ছে। যারা নবীর হাদিসকে অমান্য করে তারা কিভাবে দ্বীনের খেদমত করে তা আমার জ্ঞানে ধরে না।
তাবলীগ জামাতিগণ বুখারী শরীফের দুটি হাদিস দিয়ে মসজিদ ব্যবহার করতে চায়। তাই সে সম্পর্কে কিছু আলোকপাত করা যাক। বুখারী শরীফে মসজিদে পুরুষদের ঘুমানো নামে একটি পরিচ্ছেদ আছে। তাতে মাত্র দুটি হাদিস শরীফ উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বুখারী শরীফ ১ম খন্ড, কিতাবুস সালাত বা সালাত অধ্যায়ের ২৯৯ নং পরিচ্ছেদ যার নাম ‘বাবু নাউমির রিজালি ফিল মাসজিদ’ অর্থাৎ ‘পুরুষদের মসজিদে ঘুমানো’। ২৯৯ নং পরিচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়, “আবু কিলাবা (র) আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণনা করেনঃ উকল গোত্রের কতিপয় ব্যক্তি নবী (সা.) এর নিকট আসলেন এবং সুফফায় অবস্থঅন করলেন। আবদুর রহমান ইবনে আবু বকর (রা.) বলেন, সুফফাবাসিগণ ছিলেন দরিদ্র।” এ কথা বলেই দুটি হাদিস শরীফ পেশ করা হয়। হাদিস শরীফ নং ৪২৭ ও ৪২৮। উল্লেখ্য যে, মসজিদে নববীর বারান্দায় যারা অবস্থান করতেন তাদেরকে আসহাবে সুফফা বা বারান্দার অধিবাসী বলা হত। তারা খুবই গরীব ছিলেন এবং নবীজির পক্ষ থেকে কোন খাদ্য আসলে তা গ্রহণ করতেন। নবীজি এদেরকে মেহমান বলে আখ্যায়িত করেছেন। এই দলিল দিয়ে তাবলীগী ভাইয়েরা মসজিদ ব্যবহার করতে চায়, যা বোকামী ছাড়া কিছু নয়।
৪২৭ নং হাদিস: আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘তিনি মসজিদে নববীতে ঘুমাতেন। তিনি ছিলেন অবিবাহিত। তাঁর কোন পরিবার-পরিজন ছিল না।’ (বুখারী শরীফ, ১ম খন্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
পাঠকগণ! একটু গভীরভাবে চিন্তা করুণ। ২৯৯ নং পরিচ্ছেদে বলা হল সুফফাবাসিগণ ছিলেন দরিদ্র। আর আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা) মসজিদে ঘুমাতেন। তাঁর কোন পরিবার-পরিজন ছিল না অর্থাৎ তিনি গরীব ছিলেন। অতএব উক্ত হাদিস দিয়ে তাবলীগ জামাতিগণ কোনক্রমেই মসজিদে থাকতে পারবে না। কেননা আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) যে প্রেক্ষাপটে মসজিদে থাকতেন তা তাবলীগ জামাতিগণের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ নয়। উক্ত হাদিস শরীফ হতে বুঝা যায় যে, কোন গরীব মুসাফির যদি কোন স্থানে থাকার জায়গা না পায় তবে সে কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে মসজিদে থাকতে পারে। তাই তাবলগী জামাতীগণ কোনভাবেই উক্ত হাদিস শরীফ দিয়ে মসজিদ ব্যবহার করতে পারে না। এবার দ্বিতীয় হাদিস অর্থাৎ ৪২৮ নং হাদিস শরীফের দিকে লক্ষ্য করি।
৪২৭ নং হাদিসঃ সাহল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, “ তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সা.) ফাতিমা (রা.) এর ঘরে এলেন, কিন্তু আলী (রা.) কে ঘরে পেলেন না। তিনি ফাতিমা (রা.) কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ আমার চাচাত ভাই কোথায়? তিনি বললেনঃ আমার ও তাঁর মধ্যে কিছু ঘটেছে। তিনি আমার সাথে রাগ করে বাইরে চলে গেছেন। আমার কাছে দুপুরের বিশ্রামও করেননি। তারপর রাসূলুল্লাহ (সা.) এক ব্যক্তিকে বললেনঃ দেখ তো সে কোথায়? সে ব্যক্তি খুঁজে এসে বললোঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি মসজিদে শুয়ে আছেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) এলেন, তখন আলী (রা.) কাত হয়ে শুয়ে ছিলেন। তাঁর শরীরের এক পাশের চাদর পড়ে গিয়েছে এবং তাঁর শরীরে মাটি লেগেছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর শরীরের মাটি ঝেড়ে দিতে দিতে বললেনঃ উঠ, হে আবু তুরাব! উঠ, হে আবু তুরাব!” (বুখারী শরীফ, ১ম খন্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
পাঠকগণ! একটু গভীরভাবে চিন্তা করুণ। এখানে নবীজি (সা.) হযরত আলী (রা.) এর মসজিদ শয়ন করাকে পছন্দ করেন নি, তাই তাঁকে উঠ, হে আবু তুরাব! উঠ, হে আবু তুরাব!” বলে মসজিদ থেকে নিয়ে আসলেন। কেননা মসজিদ বিশ্রামের স্থান নয়, বিশ্রামের স্থান হলো বাড়ী। আর হযরত আলী (রা.) বাড়ী আছে, তিনি মসজিদে কেন ঘুমাবেন? তাই নবীজি (সা.) তাঁর মসজিদে ঘুমানো পছন্দ করলেন না বলে তাকে মসজিদ থেকে নিয়ে আসলেন। অতএব এ হাদীস দিয়েও তাবলীগ জামাতীগণ মসজিদকে থাকার হোটেল বানাতে পারবে না।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আকরাম (রা.) হতে বর্ণিত হুযুর আকরাম (সা.) এরশাদ করেন, “তোমরা মসজিদকে ঘুমাবার স্থান বানাইও না।” (উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী, ৫ম খন্ড, ৪৪৬ পৃষ্ঠা)। যেখানে মসজিদে ঘুমানো স্পষ্ট নিষেধ রয়েছে, সেখানে অন্যান্য হাদিসগুলির মর্মার্থ এবং প্রেক্ষাপট অবশ্যই বিশ্লেষণ করতে হবে। বিশ্লেষণ না করে যেন-তেনভাবে মসজিদ ব্যবহার করা যাবে না। কেননা ইসলামের ইতিহাসে এমন কোন প্রমান নেই যে, সাহাবায়ে কেরাম ইসলামের দাওয়াত নিয়ে কোন মসজিদে অবস্থান করেছেন। হুজুর পাক (সা.) বিভিন্ন রাষ্ট্রে ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন চিঠির মাধ্যমে এবং সরাসরি রাষ্ট্র প্রধানের নিকট। সেখানে সাহাবায়ে কেরাম নবীজির চিঠি নিয়ে সরাসরি রাষ্ট্র প্রধানের নিকট গেছেন, কোন মসজিদ বা ধর্ম উপাসনালয়ে অবস্থান করেননি। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াস এর নিকট নবীজি (সা.) ইসলামের দাওয়াত দিয়েছিলেন চিঠির মাধ্যমে। অতএব তাবলীগ জামাতের মসজিদ দখল কুরআন হাদিস বিরোধী। যদি কেহ হাদিস দিয়ে মসজিদ দখল প্রমাণ করতে চায়, তবে তা হবে হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা। মানুষ যখন কোন বিপদে পড়ে, তখন সে বিপদ থেকে বাঁচার জন্য কোন উপায় খুঁজতে থাকে। সেরূপভাবে তাবলীগ জামাতিগণ মসজিদ দখলের জন্য বিভিন্ন হাদিসের ভূল ব্যাখ্যা দিয়ে থাকে।
হাদীস শরীফ পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে, দরিদ্র ও সামর্থ্যহীন মুসাফির মসজিদে রাতে কিছু সময় বা কয়েকদিন থেকেছেন। কেননা নবীজির যুগে আবাসিক হোটেল ছিল না। বর্তমানে অনেক আবাসিক হোটেল আছে। তাই মসজিদকে আবাসিক হোটেল না বানানোই শ্রেয়। হাদীস শরীফ হতে জানা যায় যে, সাহাবীগণ যদি কোন কারণবশতঃ মসজিদে ঘুমাতেন তবে মসজিদে নববী ব্যতিত অন্য কোন মসজিদে তার প্রমাণ পাওয়া যায় না। এ ব্যাপারে ফতোয়া আলমগীরীতে উল্লেখ আছে, “মসজিদে না ঘুমানই উত্তম।” নবীজি (সা.) তিন মসজিদ ব্যতিরেকে অন্য কোন মসজিদে সফর করতে নিষেধ করেছেন। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত রাসূলে কারীম (সা.) এরশাদ করেন,
“তিন মসজিদ ছাড়া অন্য কোন মসজিদে সফর করা যাবে না। মসজিদে হারাম (মক্কা), আমার মসজিদ (মসজিদে নববী) এবং মসজিদে আল আকসা (বায়তুল মুকাদ্দাস)” (সূত্র: বুখারী শরীফ, হাদিস নং-১১২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও মুসলিম শরীফ, হাদিস নং-৩৪৫০)। এ বক্তব্যটির অনুকূলে মুসনাদে আহমদে নিম্নোক্ত বর্ণনাটি সমর্থন হিসেবে পাওয়া যায়।
হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, “মসজিদে হারাম, মসজিদে আকসা ও মসজিদে নববী ব্যতিত অন্য কোন মসজিদে নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে সফর করা কোন মুসাফিরের জন্য সঙ্গত নয়। (মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ১১৬০৯)
কিন্তু তাবলীগী ভাইয়েরা নবীজির হাদিসকে অমান্য করে বিভিন্ন মসজিদে সফর করে বেড়ায়, যা ইসলামের পরিপন্থী। এ ব্যাপারে মসজিদ কমিটিকে সচেতন হতে হবে, যেন ইলিয়াছি বাহিনী মসজিদ ব্যবহার ও মসজিদের পরিবত্রতা নষ্ট করতে না পারে। অবশ্য কিছু কিছু সচেতন মসজিদ কমিটি তাবলীগ জামাত ভ্রান্ত আকিদার কারণে মসজিদে ঢুকতেই দেয় না।