ফকির উয়ায়ছী:
৫:৩# “আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।”
উপরোক্ত আয়াতটি কোরানের শেষ আয়াত। রাছুল সা. এর ওফাতের ৮১ দিন পূর্বে খাদিরে খুম নামক স্থানে নবীজির বিদায় হজ্বের শেষ ভাষনের দিন নাজিল হয়েছে বলেই জানতে পেরেছি। এই আয়াতটি ভাল করে লক্ষ করলে দেখা যায় আয়াতটি সমগ্র মানব জাতির জন্যই। যেহেতু রাছুল সা. বিশ্ব নবী। আর কোরান হচ্ছে সর্বশেষ এবং সর্বউত্তম আসমানি কিতাব।
আয়াতটির প্রথম অংশে বলা হয়েছে “আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম” এই ‘দ্বীন’ শব্দটি বলতে শুধু মুসলমানদের জন্য বলা আল্লার মনোনীত শব্দ নয়। দ্বীন অর্থাৎ মত, পথ, বিশ্বাস, আদর্শ, মতবাদ। দ্বীন শব্দটি বুঝমান ব্যক্তিগন সকলের জন্যেই।
পরের অংশ “তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।” অর্থাৎ (ইসলাম) শান্তিকে তোমাদের জন্য পথ/মত/ আদর্শকে মতবাদকে পছন্দ করলাম। আয়াতে ব্যবহৃত ইসলাম এবং দ্বীন শব্দ দুটি আরবী শব্দ। বাংলা অনুবাদকারীগন যদি অনুবাদের সময় বাংলা এবং আরবী সংমিশ্রন না ঘটাতেন তবে কতই না উত্তম হতো। আমাদেরও বুঝতে সুবিধা হতো। ইসলাম শব্দটি যে শুধুই মুসলমান গোষ্ঠীর জন্য এটা আল্লা কোথাও বলেন নাই।
আল্লার ইসলাম (শান্তি) প্রতিটি আদমের জন্যই। হাদিসে পাওয়া যায় আল্লা বলেছেন “আমি প্রতিটি আদম সন্তানকে ইসলামের ফিৎরাতের উপর সৃষ্টি করেছি।” আল্লার সৃষ্টির বিধান চলমান প্রকৃয়া। আদম আ. এরপর আদম জাত সৃষ্টির প্রকৃয়া জাত (গোত্র) ভেদে পরিবর্তন নাই। প্রতিটি মানব শিশুই শান্তির কর্ম সাধনের মধ্য দিয়েই দুনিয়ায় আগত। মানুষের বানানো ইসলামে কোন শান্তি নাই। একে অপরের উপর বিদ্বেষী হয়ে ক্ষতি করা এটা আল্লার বিধান নয়।
ইসলাম শব্দটি গোটা মানব গোষ্ঠীর জন্যই মনোনীত আল্লার বাণী। ইসলাম (শান্তি) প্রতিটি জাত এবং সৃষ্টিরই কাম্য।
ইসলাম এবং ধর্ম শব্দদুটিকে মানুষ একসাথে যুক্ত করেও সুন্দরমত করতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু যাদের কাছে আমরা শিক্ষা গ্রহন করতে যাই, এই শব্দ গুলি অর্থ ব্যবহার বিধি আমাদের সঠিক ভাবে শিক্ষা দিতে পারেন নাই। পারবেন কি করে তারা আছেন নতুনত্ত্ব জন্ম দিতে ব্যস্ত। ইসলামে মনোনীবেশ করে ধর্ম পালন যারা করে তারা কখনোই অন্যর উপর জবরদোস্তী করতে পারে না। যারা ধর্ম পালনের উদ্দেশ্যে ইসলামকে হেফাজত করতে চায় তারা সঠিক ইসলামের সঙ্গাই জানে না।
আর ধর্ম অর্থাৎ স্বভাব শব্দটি দলগত নয়। ব্যক্তি সত্ত্বা এমনকি প্রতিটি প্রানীর জন্য প্রযোজ্য শব্দ। সকল জাতি এবং প্রতিটি প্রাণীর ধর্ম (স্বভাব)ভীন্ন হওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়। একই শ্রেণীভুক্ত হলেও ধর্ম (স্বভাব) ভীন্ন হতেই পারে।
ইসলাম (শান্তি), মুসলমান(আত্মসমর্পনকারী) এবং ধর্ম(স্বভাব) আরবী শব্দ সঠিক বাংলা বুঝাতেন কতই না ভাল হতো। আমাদের আলেম সাহেবগন যদি ইসলাম, মুসলমান এবং ধর্ম আরবী শব্দগুলি শিক্ষার সম্পর্কে সঠিক ভাবে বুঝ দিতেন তবে এই শব্দগুলি ব্যবহারকারীগন অন্যের উপর জুলম করতে পারতেন না। ইসলাম, মুসলমান এবং ধর্ম শব্দগুলি পালনকারী অনুসারীগন আল্লার কাছে ডানদিকের দলের বিবেচিত হবে তারা নিজেরাও বুঝতে পারবেন।