ফকির উয়ায়ছী:
ইসলামের জন্য শরিয়ত শিক্ষা যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু মারেফতের জ্ঞান অর্জনও জরুরী। ইসলাম বলতে যারা শুধুই শরিয়ত বা একক ভাবে মারেফত বুঝেন সেটা কোন ক্রমেই সঠিক নয়। একটাকে বাদ দিলেও সঠিক ইসলাম পালন হওয়ার সুযোগ নাই। আজ প্রায় তিন বৎসর অতিবাহিত হচ্ছে আমার লেখার কারণ উল্লেখ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব হলো। আল্লার পবিত্র আয়াতে কারীমের বিরোধীতা যারা করে এমনকি যারা রাছুল সা. এর নিন্মোক্ত হাদিসের বিরুধীতা করে। উয়ায়ছী তরিকত তাদের বিরোধীতা করে। যেহেতু ফেসবুক গনমাধ্যম শিক্ষিত মানুষদের মিলন মেলা। তাই ফেসবুকে আল্লা রাছুল সা. এবং নবির আহলে বায়াতের পক্ষে কথা বলছি।
হাদিস:-
“কুল্লু বেদআ’তুন দালালাতুন” অর্থাৎ- প্রত্যেক বেদাতই (সংযোজন+ বিয়োজন) পথভ্রষ্টতা।
গর্তে পরতে যাওয়া মানুষটিকে রক্ষা করার দ্বায়ীত্ত্ববোধ মনে করে মোটামুটি সকলেই। আল্লা রাছুল বিরোধী হয়ে জাহান্নামের দিকে ধাবিত হওয়া মানুষদের ফিরানোর চেষ্টা করতে চায় না। কেউ কেউ ভাবে আমি ফকির উয়ায়ছী শুধু ফেসবুকে লেখালেখি করি। কোরআন হাদিসের কথা বলি। ঠিক, আমি তাই করি। কারণ ডিজিটাল পদ্ধুতিতে মারেফতের জ্ঞান পাওয়ার সম্ভবনা কোন দিনও হবে না। আমি আমার কিতাবে স্পষ্ট করেই লিখেছি জাগতিক দুনিয়া কামনাকারীদের জন্য উয়ায়ছী তরিকত নয়। ইমান কঠিন না হলে আমলের অহংকার যেমন কোন কাজে আসবে না। এমনকি কল্পনায় পিরকে আল্লা রাছুল মনে করে আল্লা রাছুল বিরোধী হয়ে উল্টা পথে গমন কোন কাজে আসবে না।
যাদের স্বার্থে ব্যঘাত ঘটে তারা মনে করে এবং বলে মার্কেটিং করি। মানুষ মার্কেটিং করে ব্যবসার জন্য দাওয়াত দেয়। আমার পোষ্টে কোন দাওয়াত নেই। আমার তরিকতের ব্যপারেও বলি না। উয়ায়ছী তরিকতের সুনামেও কোন কথা বলি নাই কখনো। আমার তো স্বার্থ নাই। আল্লা রাছুল সা.কে যতটুকু বলেছিলো হে নবি আপনার দায়ীত্ত্ব শুধু বাণী পৌচ্ছে দেওয়া। আমিও আল্লার রাছুল সা. এর কথা গুলি থেকে সার কথাগু্লি তুলে ধরছি।
আমি মার্কেটিং করছি আল্লা রাছুল সা. এর বাণী। তুলে ধরলে কারো বোধ উদয় হয়ে বিপথগামীতা বর্জন করে আল্লা রাছুল এবং আহলে বায়াতের পথ অনুসরণ করে সে আশা নিয়ে। জাহান্নাম থেকে ফিরানোর জন্য আল্লা রাছুল আহলে বায়াতের মার্কেটিং করি। আল্লা জিহাদের কথা বলেছেন। সেটা করতে চেষ্টা করছি শিক্ষিত বেদাতকারীদের সাথে। আর সবচেয়ে বড় জিহাদ আকবর করতে চাই নিজের ভিতর থাকা খান্নাসের সাথে।
আহলে বায়াতগন বেহেস্তের নেতাদের যারা অন্তর থেকে পছন্দ করেন; বেহেস্ত প্রত্যাশি শয়িয়ত পন্থিদের সাথে মারেফতের কোন মতভেদ হতে পারে না। উয়ায়ছী তরিকতের সাথে অমিল এক যায়গাতেই। যারা নবি আহলে বায়াত বিরোধী এবং আহলে বায়াতের বিরোধীদের সমর্থনকারীদের সাথে। উয়ায়ছী তরিকতপন্থিগন মিত্র মনে করে না করবেও না সে সমস্ত লোকদের। এই দোদেল বান্দারাই প্রকৃত মুনাফিক। যারা স্বার্থ রক্ষার চিন্তায় জনসমক্ষে আহলে বায়াত বিরোধীদের সর্বোচ্চে রাখে পিছনে অবৈধ বলে। মারেফতের রক্ষক সেজে বসে আছে সমাজ সংসারে।
উয়ায়ছী তরিকতে অধিকাংশ মানুষ অন্য তরিকত থেকে এসে বায়াত হয়। আবার কিছু যে নতুন আসে না তা একবারেই নয়। আর আসলে যে এটাই ধরে রাখতে হবে তেমন কোন কসমও দেওয়া হয় না। আর দেওয়ার কোন উপাও নাই। ইতিহাস ঘাটলে পাওয়া যায় হযরত খাজা মাইনুদ্দিন চিশতী সাঞ্জারী রাহ. ১১জন পিরের মুরিদ ছিলেন। তিঁনার মতন একজন জ্ঞাণী ব্যক্তি এমনি এমনি ইমাম বদল করেন নাই। তিনার কথা ভেবে যদি আমার মতন অধম লাফাই সেটাও মূর্খতা ছাড়া কিছুই নয়। আমরা যাদের পুথিগত বিদ্যার জ্ঞান আছে সেহেতু সঠিক বেঠিক বিবেচনার জন্য কোরআন হাদিসের সাহায্য নিয়ে সঠিক নির্বাচন করতেই পারি। সূরা নিসার ৫৯ আয়াতে আল্লা কতক্ষন পর্যন্ত পিরকে মানা যাবে এই ব্যপারে উল্লেখ করেই দিয়েছেন। কাজেই কেউ যদি না বুঝে উয়ায়ছী তরিকত গ্রহন করেও থাকে তার সে সুযোগ আছে নিজেকে যাচাই করার। নিজ জ্ঞানে অন্যের কথায় বা বড় কোন দলের চটদার কথায় মত্ত হয়ে নয়। আপনারা যাদের যে তরিকত ভাল লাগে তাদের ভাল করে চিন্তা করেই তরিকতে আসা দরকার। কারণ আনুগ্যতের বায়াত পরে নিজেদের অবুঝপনার জন্য শপথ ভঙ্গ করলে সে ক্ষতি আপনাদেরই কোরআনের আল্লা তাই বলেছেন-৪৮:১০ আয়াতে। নিজের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি থাকলে নিজের চাহিদা মুরশিদের সাথে বসে পেতে চেষ্টা করুন। আর যদি মনের সাথে না মিলে তবে অন্তরের তৃপ্তির জন্য বর্জন করে তো হবেই। বায়াতের শর্ত ভঙ্গ করে নিজের ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকাই নিজের জন্য উত্তম। যদি মুরশিদ আল্লা এবং রাছুল সা.এর কোরআন হাদিসের পরিপন্থি না হয়ে থাকে। সবশেষ কথা হচ্ছে ভবিষত প্রজন্ম যেন সঠিক বেঠিক বিবেচনার জন্য কিছু খোড়াক পায় তাদের জন্যই লিখা দরকার মনে করেই লিখে যাচ্ছি এবং লিখতে হবে।