জামানার মুজাদ্দেদ না চিনলে জাহেল হালে মৃত্যু- পর্ব #৩
============================================
ফকির উয়ায়ছী:
দ্বিতীয় পর্বে উল্লেখ করেছি আমাদের তরিকত অনুযায়ী মুজাদ্দিদ কাদেরকে বলা যায়? মুজাদ্দিদ অর্থাৎ সংস্কারক। আমরা বুঝি ধর্মীয় সংস্কারকেই (নেতা) বুঝি। যেহেতু মুজাদ্দিদ সংস্কারক শুধুই যে সঠিক ধর্মীয় হবে সেটা মনে করাও ঠিক হবে না। ইবলিশ পানায় গুরু ঠাকুর শয়তানদের মুজাদ্দিদ (নেতা) বললেও ভুল হবে না। যাক শয়তানের নেতা নিয়ে কথা বলার ইচ্ছা নাই।
হাদিস অনুযায়ী ১০০ বৎসরে একজন মুজাদ্দিদ আসবেন। এই মুজাদ্দিদ যে সকল মানবের জন্য নয় সেটা সকলেরই পরিষ্কার হওয়া দরকার। কোন নবীকেও আল্লা সকলের মানবের জন্য প্রেরণ করেন নাই। একমাত্র মুহাম্মদ সা.-কেই বিশ্বনবী হিসাবে আল্লা পাঠিয়েছেন। রাছুল সা.কে আল্লা পাঠানোর আগে ৫০০ বৎসর নবী বিহীন রেখেছিলেন। তখনও অনেক নেতা ছিলো এবং রাছুল সা. এর ওফাতের পরও অনেক নেতা ছিলেন। কোরানের আয়াত পঠনেই বুঝা যায়। সূরা মুমিনুন ২৩:৫৩# “প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে আনন্দিত হচ্ছে।” এই আয়াতটিতে বুঝা যাচ্ছে একাধিক সম্প্রদায়ের কথা। অর্থাৎ প্রত্যেক সম্প্রদায়েরই একজন করে নেতা ছিলো। আর এ জামানায় যেটা বাস্তবেই দেখা যায় সেটা প্রমান করতে কোরানের দলিল প্রয়োজন পরে না। উদাহরন দিলেই বুঝা যাবে।
বাংলাদেশে বিশাল দেহি এক পির আছে তার নামের সাথে হর হামেশায়ই দেখা যায়। (মা.জি.আ) ব্যবহার করে। সেদিন কিছু আবেগ প্রবন মুরিদ সে পিরের নামের সাথে লিখে দিয়েছেন (মা.আ)। ওন লাইন গনমাধ্যম আর লিখতে কাগজও লাগে না। যতসামান্য পয়সা খরচ হয় সেটা মুরশিদ প্রেমে হিসাবেও আসে না। যাই হোকউ আমি সে মুরিদকে জিজ্ঞাসা করলাম। আপনার পির সাহেবের নামের সাথে (মা.আ) লিখেছে এটার অর্থটা জানালে খুশি হবো। সে মুরিদ আমাকে ব্লক করে দিয়েছেন। কি আর বলা এই পিরকে কিছু সংখ্যক মুরিদ মুজাদ্দিদ মনে করলেও এই পির সাহেব তার শশুর থেকে খেলাফত পেয়েছেন কিন্তু শশুর বাড়ি লোকদের সাথে কাঠ কুড়াল সম্পর্ক। শশুর বাড়ির লোকজন শশুরের গদ্দিনশীন এবং তাদের দরবারের মুরিদগন তাকে (বিশাল দেহি লোকটাকে) মুজাদ্দিদ হিসাবে মানার কোন সুযোগই নাই। এতেও বুঝা যায় মুজাদ্দিদ গোষ্ঠী/কওমের জন্য আলাদা আলাদা। শিয়া মাজহাবের আয়তুল্লা খোমেনী সাহেবের নাম অনেক শিয়ারা জানেই না। কিভাবে তারা মুজাদ্দিদ চিনবেন? যারা চিনে না তারা কি জাহান্নামী বলবেন শিয়া মাজহাবের লোক সকল? মুরিদ বা অনুসারীর কাছে যার যার মুরশিদ মুজাদ্দিদ তুল্য হতে পারে। নেতাগন ধর্মবানী বলেন বা ব্যাখ্যা করেন তা যদি কোরান মাফিক হয়। অন্যথায় মুজাদ্দিদ উপাধিতে ভুষিত করার সুযোগ নাই। উয়ায়ছী তরিকতের খলিফা অর্থাৎ পির বর্তমানে আনুমানিক ২০০ আছে। কিন্তু আমাদের উয়ায়ছী তরিকতে ১৪০০ শতাব্দির মুজাদ্দিদ হিসাবে হযরত শাহ আব্দুর রহিম উয়ায়ছী রাহ. মানা হয়। এবং ১৫০০ শতাব্দির মুজাদ্দিদ হিসাবে আব্দুর রহিম শাহ সাহেবের বড় পুত্র হযরত আতাউল হক উয়ায়ছী রাহ. ধরা যায়। এরপর আর কাউকে এই মর্যাদা দেওয়ার কারন দেখি না। এটা শুধু আমার কথা নয় আমার মুরশিদ কিবলাজানও এই রায় দেন। কিন্তু দুই একটা বই নকল করে লিখেছেন এমন পির তাদের আবেগী মুরিদগন সে পিরের সাহেবের নামের সাথে মুজাদ্দিদ ব্যবহার করছেন। তারা আবার একাধিক তরিকতের খলিফা একারণেই অতি আবেগি। তারাও উয়ায়ছী তরিকতের পির দ্বাবী করছে। তবে তাদের আমি প্রকৃত উয়ায়ছী বলি না।
মুজাদ্দিদ তাকেই মানতে হবে কোরানে নেতা এবং নেত্রীত্ত্বের মানার ব্যপারে সুরা নিসার ৫৯ আয়াত অনুসরণ করতে হবে।
৪:৫৯# “হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর-যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম।”
আয়াতে উল্লেখিত ওলিল আমর (নেতা) সাথে দ্বিমত হলেই যেহেতু আল্লা এবং রাছুল সা. এর দিকে ফিরতে হবে। আর মুজাদ্দিদগন তো কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক কথা বলতেই পারেন না।
———-আগামী পর্বে শেষ করবো
≫≫≫≫≫≫≫≫≫≫≫≫≫≫≪≪≪≪≪≪≪≪≪≪≪≪≪≪≪≪
প্রচারনা শুধু মাত্র:
দরবার এ উয়ায়ছী
তিতপল্লাহ, জামালপুর
ØØ আমরা অন্য কোন খানকা/দরবারের সাথে সম্পৃক্ত নই।ØØ
