জামানার মুজাদ্দেদ না চিনলে জাহেল হালে মৃত্যু- পর্ব #২
=========================================
ফকির উয়ায়ছী:
প্রথম পর্বে উপরোক্ত বিষয়ে লেখার কারণ উল্লেখ করেছি। প্রকৃত উয়ায়ছীগনদের দৃষ্টিতে কারা মুজাদ্দিদ হওয়ার যোগ্য। এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশে উয়ায়ছী তরিকতের গোড়া পত্তনকারী বর্তমান মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর থানাধীন ডাকরখালী গ্রাম নিবাসী হযরত শাহ সৈয়দ আবদুর রহীম উয়ায়ছী রাহ, যাকে মুজাদ্দিদে হাদী চাহারদাহ সাদী (চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ) হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে, তাঁর মছনবী কিতাবের হপ্তম দফতরে ২৬৯ পৃষ্ঠায় লিখেছেন:
মুরশিদ মিজাজী যিনি দোছরা দরজায়।
হিজরীর সও সাল পুরা যবে হয় ।।
আর এক সও সাল শুরু হয়ে থাকে।
সেহি ওক্তে করে আল্লা মশহুর তাহাকে।।
নুতন ধরন মতে তালীম দিনের।
তৈয়ার করিয়া তিনি করেন জাহের।।
সে তালিম কোরানের মোয়াফেক হয়।
মানিতে লাজেম তাহা ইসলাম সবায়।।
এরুপ পীরের নাম হাদীসে নবীর।
মোজাদ্দেদ হইয়াছে দেখ জাহাগীর।।
কেতাবল এলেমের বাব ফজিলতে।
আবু দাউদ হতে আনে সাহেবে মিসকাতে।।
দিলাম লিখিয়া পড়ে দেখ নামদার।
কি খুব হাদীছ পাক রাসুলে খোদার।।
এহি হাদীছের বলে মিজাজী মুরশেদ।
করিতেছি হিদায়েত হয়ে মোজাদ্দেদ।।
মোজাদ্দেদ লোগের এহি আলামত হয়।
নুতন কহিবে যাহা দিনের কথায়।।
কোরানের হাদীছের মোয়াফেক হবে।
নাহি মিলিবেক কিন্তু দোছরা কেতাবে।।
ফিকা অছুলের যদি মোয়াফেক হয়।
না হবে তাজ্বদীদ নাম তাহার নিশ্চয়।।
মাজেজা ও কেরামত যাহা কোরানের।
আর যাহা রাসুলের হয় হাদীসের।।
কিয়ামত তক তাহা হর শত সালে।
জাহের করিবে আল্লা সালের আউয়ালে।।
প্রকৃত উয়ায়ছী তরিকতের লোকজন বাংলাদেশের যে বুজর্গগনকে সবচেয়ে মাননীয় মনে করেন তার ব্যাখ্যা মত মুজাদ্দিদের সর্বপ্রধান গুন হলো তিনি দ্বীনের যেসব কথা – বিশেষ করে, নূতন কথা বলবেন, সেসব অবশ্যই কোরান হাদীসের মোয়াফেক হবে অর্থাৎ মিল থাকবে। সেমতে যার কথা কোরান হাদীসের বানীর বিরোধী তাকে কোন ভাবেই মুজাদ্দিদ খেতাবে আখ্যায়িত করা যাবে না। এই সব কথা যদি জ্ঞানী ইমানদার লোকেরা না মানে তাদের ঈমানদার এমনকি মুসলমান বলা যায় না।
উপরের যাহা বর্ণনা করেছি তাহা আমি উল্লেখ করেই দিয়েছি; এটা উয়ায়ছী তরিকতের জন্য প্রযোজ্য এবং বিশ্বাস। এই কথা সবাই মানবে না। এমনকি নামধারী উয়ায়ছীরাই তো মানে না। এমন কথা যদি নামধারী উয়ায়ছীগন মানে তবে তাদের অবস্থান ঠিক রাখতে পারবে না। এতে করে পরিষ্কার বুঝা যায়। একই সময় বা গোটা মানব জাতীর জন্য একজন মুজাদ্দিদ অর্থাৎ সংস্কারক নয়। মুজাদ্দিদ প্রতিটি কওমের জন্যই আলাদা আলাদা হবে।
শরীর মোটা হলেই বা ঢাক ঢোল বেশী বাজনা বাদকের আওয়াজ ছড়ানো অথবা দলে বড় হলেই সে দলের নেতা মুজাদ্দিদ হবে সেটা মনে করা মোটেও উচিৎ নয়। এমন নেতা গুলিকে আমি মানলেও হয়তো তারা আমার মতন পাপীকে মেনে নিবেন না। শুধু আমি কেন মানবের মাঝে নানা রকম গোষ্ঠী আছে তাদের নেতাও এক নয়।
মুজাদ্দিদ সংস্কারক তিনি অবশ্যই একজন সমক্য নেতা হবেন। অনুপস্থিত নেতা যখন সমূক্ষে আসবে তখন তাকে মানা যাবে। এবং পূর্বের মুজাদ্দিদ তার কওমের অনুসারীদের জন্য যাহা বলে গেছেন সেসব যদি কোরানের সাথে মিল থাকে সেটাও মানা যাবে। তবে যিনি আসবেন তার অপেক্ষায় বসে থাকা এমনকি তার কাছে আনুগত্য করে পরিশুদ্ধ হওয়ার খেয়াল মনে থাকলে আল্লার প্রতি অবিশ্বাস করাই হয় পরোক্ষভাবে। কারণ আল্লা কারো মৃত্যুকাল নির্ধারন করে দেন নাই। সেমতে অপেক্ষা করার সময় কোথায়?
এই ধারনা পোষনকারী দল মতের অনুসারীরা চিন্তা করে দেখবেন। আপনারা যারা অপেক্ষা করছেন মুজাদ্দিদ আসবেন। এমন অপেক্ষা করতে করতে আপনাদের কত পুরুষ জাহেল অবস্থায় মৃত্যু বরন করে গেছেন। আপনাদের এই অপেক্ষার পালা বুঝিয়ে দিচ্ছে তারা সকলেই জাহেল অবস্থাতেই মৃত্যু বরন করেছে। আর এটা আপনারা বলেন আর নাই বলেন এটা সকলেই জানে যে, জাহেলী হালাতে মৃত্যু বরণ করলে জাহান্নাম অবধারিত। আপনারা মুখে না বললেও আপনারা অপেক্ষাতেই রয়েছেন যুগের ঈমামের জন্য। আপনাদের ধ্যান ধারনায় আপনাদের পূর্ব পুরুষ স্পষ্ট জাহান্নামী হলেও আমি তা মানতে পারি না। আমি শুধু এমন অনুসারীদের চিন্তা করতে অনুরোধ করছি মাত্র।
——————চলবে
≫≫≫≫≫≫≫≫≫≫≫≫≫≫≪≪≪≪≪≪≪≪≪≪≪≪≪≪≪≪
প্রচারনা শুধু মাত্র:
দরবার এ উয়ায়ছী
তিতপল্লাহ, জামালপুর
ØØ আমরা অন্য কোন খানকা/দরবারের সাথে সম্পৃক্ত নই।ØØ
