এতেকাফে বসে কদর খুজার দাওয়াত পেলাম
================================
ফকির উয়ায়ছী:
আজকে আমাদের ১৮ রমযান পার হলেও সৌদির সাথে যারা মিল রেখে রোযা করেছে তাদের ১৯ রোযা। আগামীকাল রাত্র থেকে তার কদর খুজা শুরু করবেন। তাই পোষ্টটা পড়ে দেখুন কদরের ফজিলতটা বুঝে এতেকাফে তালাশ করতে পারবেন।
একটা ভবিষ্যতবাণী শুধু আমার নয় মোটামুটি সকলেই জানেন ২৬ রমযান দিবাগত রাত্রই শবে কদর নিশ্চিত। আমাকে একজন তাবলীগের মুরুব্বী অনুরোধ করলেন এবার এতেকাফে বসতে তার সাথে। লোকটির বয়স ৮৬ বৎসরের বেশী। এ শরীরে মসজিদ নাপাক করার সমুহ সম্ভবনা আছে। আর যেহেতু এত বৎসরে কিছু পায় নাই খালি খুজেছে। কি খুজেছে সেটাও জানে না। আমি বললাম আমার সাথে বসেন নয়দিন ভর ঘর ছেড়ে থাকতে হবে না। ২৬রাত্রে বসবেন সে রাত্রেই কাজ সাড়া হবে। সবাই ঐ দিনেই পাবে যা পূর্বেও পেয়েছিলেন। প্রশ্ন করলাম কি পেয়েছিলেন? নাজিলকৃত বস্তুটি দেখতে কেমন? বলে সেটা তো জানি না। অনেকে বসে আমিও বসি। আমি বললাম খুজে পান ২৬শের রাত্রে অযথা কেন বসে থাকেন ঘর ছেড়ে এতদিন? উত্তর সোয়াব আছে। কথা হচ্ছে যার সোয়াব দরকার সে তো বসবেই। সোয়াব পাচ্ছেন? সেটা তিনি জানেন না। আমি তিনবার গিয়ে যেখানে কিছু পাবো না। কেন যাবো সেখানে বলুন তো? কি পাবো সেটা জানি না। কেন যাবো বলুন তো? যা খুজি দেখতে কেমন চিনিয়ে দিবে না আলেমগন। তবে কি খুজবো বলুন তো? গাধার খাটুনি খাটতে আমাকে কেন ডাকবেন? আপনী খাটুন। যেদিন দেখিয়ে চিনিয়ে দিবেন কি বস্তুটা খুজতে হবে। সে রমযান মাস পুরাটা মসজিদেই থাকবো।
প্রথমেই কোরানের একটি আয়াত দিয়েই শুরু করছি। আল্লা বলেই দিয়েছেন পবিত্র কোরানে। সকলে পাঠ করলে কি হবে? আল্লা বলেছেনে কোরান কাদের জন্য প্রযোজ্য।
৩৮:২৯# “এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে।”
উপরোক্ত আয়াত থাকার পরও অধিকাংশ মানুষ কোরান বুঝে পড়ে না। ৩৮:২৯ আয়াতটাতে স্পষ্ট বুঝা যায় সকলের জন্য কোরান নয়। যাদের নিজস্ব চেতনা নাই তারা কোরান বুঝবে না কশ্মিন কালেও। এরা যাদের কথায় ধর্মের কর্ম করে তারা আরবী গড় গড় করে পড়ে সেটার সার্মর্ম বুঝে না। তবুও বয়ান করেই চলে। লেবাসের সুবাধে ধর্ম ভীরু মানুষ আমরা তাদের কথা শুনেই জীবন পার করি। কদর সম্পর্কে কদর নামেই একটি সূরা কোরানে আছে আমি সেটার বাংলা অর্থ ওন লাইন থেকেই সংযোজন।
*** সূরা কদর***
===========
(1) আমি একে নাযিল করেছি শবে-কদরে।
(2) শবে-কদর সমন্ধে আপনি কি জানেন?
(3) শবে-কদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।
(4) এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে।
(5) এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
১ নং “ইন্না আংঝালনা-হু ফী লাইলাতিল কদর।”
“আমি একে নাজিল করেছি কদরের রাত্রে”। এখানে বিষয়টি অন্তত্য পরিষ্কার লাইলাতুল কদর অর্থাৎ অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত অথবা পবিত্র রজনী। আমরা ধরে বসে আছি বা পালন করছি আয়াতের শেষ অংশ। প্রথম অংশে বলা হয়েছে নাজিলকৃত বস্তুর কথা। ‘একে’ (বস্তু/সত্ত্বা) শব্দটি দিয়ে কি বুঝানো হলো? ‘একে’ শব্দটির বস্তুটি দেখতে কেমন? আমি এই বস্তুটি সঠিক ভাবে চিনতে চাই আপনাদেরকে চিনতে বলায় আমার প্রতি তিরষ্কার। আল্লা যেহেতু উল্লেখ করেছেন আমি সেটা আলোচনা করছি মাত্র। নাবুঝের দল তিরষ্কার করছে সেটা আমার উপর যায় না। বরং নাজিলকারী সত্ত্বার উপরই যায়।
নাজিলকৃত বস্তুটির যারা না চিনবে, সেটার দিকে কেউ দৃষ্টি দিবে না তারা কদর রাত্রীর সম্মান বুঝবেও না। সবই মেকী ভাব দেখাবে। যে জিনিষটি নাজিল হওয়ার জন্য এই দিনটি হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ হলো। সেটাকে খোজ করছি না কেন? আমি কি আল্লা বিরোধী? বরং যারা না বুঝের মতন আল্লার কথা পালন না করে শুধু আয়াতের শেষ অংশ নিয়েই মেতে আছে তারাই তো আল্লার কোরান বিরোধী বুঝা যায়। সূরা বাকারায় সেই সমস্ত লোকদের উদ্দেশ্যে আল্লা বলেছেন:
২:৮৫# “তবে কি তোমরা গ্রন্থের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে দূগর্তি ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই। কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন।”
কদরের রাত্রিতে নাজিল হওয়া বস্তুটির দিকে দৃষ্টি দিচ্ছেন না। আমি আল্লার কথা বলায় গাল মন্দ করছেন আপনারা দলে ভারী বলে। তাতে আমার কষ্ট নাই। আমার বিচার থাকবে আল্লার দরবারে সেখানে সত্য প্রমানের জন্য বড় দল দরকার পরবে না।
শবে কদরের রাত্রিতে যে জিনিষ আল্লা নাজিল করেছেন সমস্ত প্রশংসা সে বস্তুটির। প্রত্যেক রাত্রিতেই অন্ধকার হয়। কিন্তু কদরের রাত্রই বেশী সম্মনীত হয়েছে সেই নাজিলকৃত বস্তুটির জন্য। আমার জীবনে ৫৭৭ মাস অতিবাহিত হয়েছে। আমি কদর রাত্রিতে নাজিলকৃত বস্তুর সন্ধান না করতে পারলে আমার জীবনের হাজার মাস এলেও বৃথা।
আলেম সাহেবগন বলবেন এই রাত্রিতে কোরান নাজিল হয়েছে। কোরান নামক গ্রন্থ এক রাত্রিতে নাজিল হয় নাই। সেটা আলেম সাহেবদের থেকেই শুনেছেন আপনারা। কোরান নাজিল হয়েছে ২৩ বৎসর ৬ মাস ব্যপীয়া। এই সময়ে কমপক্ষে ২৩টি কদরের রাত্রি পার হয়েছে। এত্তেকাফে বসেছে মানুষ কি পেয়েছে? কেন বলতে পারে না? যেহেতু বলতে পারছেই না সেহেতু হাজার মাস তো বৃথাই। কাজেই সময় থাকতে চিন্তা করুণ। গালি দেওয়া সহজ চিন্তা করা লাগে না। আল্লার বাণী অর্ধেক বুঝে লাফালে ফায়দা হবে না। যেনে রাখুন এই সম্মানীত রাত্রে আল্লার বিশেষ নাজিলকৃত বস্তুর সাক্ষাত না পেলে কদর পেলেন না জীবনে উত্তম জিনিষটা অজানাই রয়ে গেলো।
আল্লার রাছুল রহমাতুল্লিল আলামিন মুহাম্মদ সা. ৬৩ বৎসর অর্থাৎ আনুমানিক ৭৫৬ মাস স্বশরীরে অবস্থান করেছেন মাটির উপর। এক হাজার মাস সময় দেন নাই তাঁর প্রিয় বন্ধুকে। অথচ কদরের রাত্রী হাজার দিনের কথা নয়; হাজার মাসের চেয়েও উত্তম বলা হয়েছে। এখানে গভীর চিন্তার বিষয়। এই রাত্রটা কেন সম্মানীত হয়েছে? বিশেষ কিছু আল্লা নাজিল করেছেন বলেই রাত্রটির মূলবৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ সেটার চিন্তা না করে সম্মানীত রাত্র খোজার কথা বলা হয়। আকাশে তাঁরার মেলায় কেউ তাঁরা খুজলে বিশেষ তারাটাকেই খুজে। বৎসরের বাকী রাত্রগুলির মতই কদরের রাত্রিও অন্ধকার রাত্রি। তবে সম্মানীত হবে তখনই যখন বুঝতে পারবেন কি নাজিল হয়েছিলো? আলেম সাহেবদের দোয়া শুনেই মনে হয় কিছু একটা পেয়েছেনই। আলেম সাহেব এবং পীর সাহেবদের জিজ্ঞাসা করে দেখুন কি পেয়েছে? লোক দেখানো এত্তেকাফ পালন করে? শরিয়তের আলেম সাহেবগন অকপটে বলবেন কিছুই পায় নাই। মারেফতের অধিকাংশ লোক সত্য এড়িয়ে কিচ্ছা কাহিনী জুড়বে। তবে চিন্তাশীল বিচক্ষন লোকেরা সহজেই ধরতে পারবে। এই রিয়ার (লোক দেখানো ইবাদত) জন্য আল্লার কাছে জবাবদিহি করতেই হবে। যারা নাজিলকৃত জিনিষ খোজ করতে বসবেন আগে জেনে নিন কি খোজ করবেন। বেক্কল লোক বাজার গিয়ে কিছুমিছু খোজ করে। চালাক লোক কচু ধরিয়ে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে। আল্লার পবিত্র জিনিষ কদরের রাত্রে যাহা নাজিল হয়েছে সেটা কিছুমিছু নয়। কোন অপ্রত্যাশিত বস্তু (ঘোড়ার ডিম) নয়। কাজেই জেনে বুঝে খোজ করার অনুরোধ রইলো। আমি পাপীষ্ঠ আল্লা, রাছুল পাগল এক পাপী বান্দা। আপনাদের আমল যেনো ফলপ্রসু হয়। একবার যারা পাবে সেটা তো বার বার খুজার দরকার নাই। কদর পেলেই তৃপ্তি অন্যাথায় বৃথা।
২০ রমযান দিবাগত রাত্রি থেকে খোজ করা বন্ধ করে দেন। যেহেতু অলিখিত ভাবে জানাই আছে ২৯ রাত্রে খুজবেন না। ২৭ রমযানেই মিলবে। সেহেতু ৭দিন ভর বসে থাকবেন কেন? কারণ ২৮ দিবাগত রাত্রি রমযানও বেজোর রাত্র। ২৮ রমযান দিবাগত রাত্রিতেও আল্লা নাজিল করতে পারেন। এটা ভুলে গেলে চলবে না। কাজেই খোজ করা জারী রাখুন। এ দুই দিনের জন্য যদি হারিয়ে ফেলেন তবে কষ্টের সীমা থাকবে না। কারণ আগামী রমযান কপালে আছে কিনা কে বলতে পারে?
আরও একটা বিষয় চলেই আসে সৌদির মানুষ কদর পায় নাকি বাংলার মানুষ পায়। আল্লার কদরের রাত্রি তো একাধিক দিনে নয়। এই আলেম সমাজ কদরের নাজিলকৃত বস্তুটি সম্পর্কে অবগত নয় বিধায় তারা শবে বরাতের বিরোধীতা করে। অথচ লাইলাতুল কদর এবং লাইলাতুল মুবারাকাত একটির সাথে অপরটি অবিচ্ছেদ সম্পর্ক। যেদিন কদর সম্পর্কে অবগত হবে সেদিন বিরোধীতা থেকে সরে আসবে। আর বাহ্যিক ভাবেও আলাদা কদর হচ্ছে অন্ধকার রাত্রিতে আর বরাত হচ্ছে আলো ঝলমল পূর্ণীমার রাত্রিতে।
বি.দ্র: ইসলামের এমন শিক্ষাগুলির জন্য মওলানা জালালউদ্দিন রুমী শামস তাবরীজের গোলামী করেছিলেন। যা শরিয়তের লোক সকল বুঝে নাই আজও।
জন্মান্ধ অন্ধকারে খোজে কিছু পাবে না? জন্মান্ধ অন্ধকার দেখে না। অন্ধকার কি তাও বুঝে না। যারা আলো দেখেছে তারাই অন্ধকার বুঝবে।
