
একটি বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আমি যা বলবো সেটা সঠিক বা মারেফতের উয়ায়ছী তরিকত সিলসিলা হলেই সকলে সঠিক হবে সেটা মনে করা সঠিক নয়। আর আমার কথা মানতে সব সময় নিষেধ করি। আমার লিখা সকলের জন্যও নয়। মাথায় যা আসে স্যোসাল মিডিয়া ফেসবুকে লিখে রাখি। তবে আমি বিশ্বাস করি প্রশ্ন উদয় হয় সেটার সমাধান অবশ্যই থাকতে হবে।
আমার সব লেখাই তাদের জন্য উৎসর্গ যারা নিন্মোক্ত আয়াতের অধিকারী।
“৩৮:২৯# এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে।”
উয়ায়ছী তরিকতের কিছু মানুষ সুরার আগে ‘কুল’ শব্দটি বাদ দিয়ে তেলাওয়াত, জিয়ারত করেন। ২০১৩ সালে তখন তাদের একটি চিঠি লিখতে বাধ্য হই। তাদের এই কর্ম তরিকত প্রধান আব্দুর রহিম উয়ায়ছী রহ. শাহ সাহেবের হুকুম গুরুবাক্য “একেলা থাকিতে যদি হয় দুনিয়াতে, তবুও না ছাড়িবে ফেল কোরানের মতে”- যদি দুনিয়াতে একাও থাকতে হয় তবুও কোরানের সাথ ছাড়বে না। কোরানের একটি শব্দ বর্জন করা কোরান বর্জন করারই সামিল। অনেকদিন আগে এ বিষয়ে লিখেছিলাম। আজ খুজে পাচ্ছি তবে তাদের কাছে লেখা চিঠিটা আজও সংরক্ষিত আছে।
এক ভদ্ররোকে সাথে কথা হচ্ছিলো ভয়েস কলে তখন প্রশ্নটা আলোচনায় এলো। যেমন যে সুরা গুলি শুরু হয় “কুল হুওয়াল্লা হু —-”/ “কুলআউযু—নাস”/ “কুল আউজুবি—ফালাক”/ “কুল ইয়া আইয়ুহাল —-”। আলোচনার বিষয় হলো আল্লা কুল(বলো) বলে নবীকে বলতে বলেছেন। কুল শব্দটা যখন ব্যবহার হয় তখন বক্তা এবং শ্রোতা দুই সত্বার উপস্থিতি প্রয়োজন। আল্লা বলেছেন মুহাম্মদকে বলতে। আমি/আপনী যখন বলি ‘কুল’ তখন আমি কাকে বলি? কেউ তো নাই আমার হুকুম পালন করার। যখন ইমামের পিছনে দাড়াই জামাতে ইমাম বলে “কুল—–আহাদ” তখন ইমামের অবস্থান কি আর মুক্তাদিগনের অবস্থান কি?
কুল শব্দটা বহুবার কোরানে এসেছে। আরবী কুল শব্দটার অর্থ আপনারা জানেন “বল”। এরই অনুরূপ শব্দ হচ্ছে নাব্বে খবর দাও। বল,খবর দাও হুকুম সূচক বাক্য। হুকুম সূচক শব্দ কোরানে আরো আছে। শরিয়তের হাফেজ, মূফতি সাহেবগন আমার চেয়েও ভাল বলতে পারবেন। কথা হচ্ছে হুকুম সূচক শব্দগুলি আল্লা ব্যবহার করেছেন তাঁর মূখ্যপাত্র মুহাম্মদ সা. এর প্রতি এটা সকলেই বুঝি।
প্রশ্ন হচ্ছে:
আমি/আপনী যখন এই শব্দগুলি ব্যবহার করি তখন হুকুমটা কার উপর করা হয়? আলেম সাহেব যাদের সাথে এই যাবৎ আলাপ করেছি তাদের কাছে উত্তর: কেউ বলেছেন কোরানে আছে তাই আমাদের পড়তে হবে। আমার সামনে মিষ্টি আছে খেতেই হবে বিধান হলে ডায়েবেটিক রোগী মারা পরবো।
কেউ কেউ বলেছে কোরান নিয়ে বাড়াবাড়ি করা যাবে না। মুহাম্মদ সা. পড়েছেন সাহাবারা পড়েছেন আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন তাই পড়তে হবে। আর মোটামুটি কমন উত্তর আল্লা সুবহানুতায়ালাই ভাল জানেন। এ কথায় কি আমার খুধা মিটে?
এ জীবনে আমি আপনী কত সহস্রকোটিবার বলেছি কুল শব্দটা কার উদ্দেশ্যে বললাম বা বললেন? তাই আমার লিষ্টে অনেক পীর সাহেব আছে তাদের কাছে আহবান করবো বিষয়টা পরিষ্কার করবেন। অনেক ওয়াজিন আছেন এই বিষয়টা পড়ে এড়িয়ে গেলে আল্লা ছাড় দিবে না জেনে শুনে সত্য গোপন করলে। আমি আজ প্রশ্ন রাখছি।
আপনী যখন নামাযে দাড়িয়ে বা তেলওয়াতে বলছেন কুল অর্থাৎ বল, বা ‘নাব্বে’ অর্থাৎ খবর দাও। আপনী কাকে বলছেন? আর আপনী যখন হুকুম দাতা আপনী তখন দাস থাকেন কি করে? নিজের অবস্থান পরিষ্কার করবেন। একথা ভুলে গেলে চলবে না আমি/আপনী দাস। তবে হুকুম কার জন্য?
আলেম সাহেবগনদের মধ্যে যদি উপরে উল্লেখিত জবাব এর বাইরে নতুন কোন উত্তর দিতে পারেন বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি মতামত দিবেন।
আমি আল্লা এবং রাছুলে এবং আহলে বায়াত অর্থাৎ নবী পরিবারের একনিষ্ঠ ভক্ত দাস, দাসানুদাশ। আমার ঈমান তাদের উপর ন্যস্ত আমি যা বলি, যা করি জেনে বুঝেই করতে চাই। এর বাইরে গুজামিল দিয়ে বুঝ মেনে নেওয়ার পাত্র আমি নই।
এই পোষ্ট পড়ে যদি কেউ মনে করেন আমি কুল শব্দটার বিপক্ষে তা মোটেও নই। আমার মনে উদয় হওয়া প্রশ্ন অনেক বৎসর নিজের মনে লুকিয়ে রেখেছি আজ শেয়ার করলাম আপনাদের সাথে। বিজ্ঞজন চিন্তা করবেন আমাকে সাহায্য করবেন।
আমার লেখায় আহবান মোটা মাথাওয়ালাদের জন্য নয়। শুধু মাত্র চিন্তাশীল মানুষদের জন্য।
#ফকির_উয়ায়ছী