শুরুতেই বলতে চাচ্ছি আমার লেখা তাদের জন্য আল্লা যাদের কথা ৩৮:২৯ আয়াতে বলেছেন।
৩৮:২৯# “এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে।”
আজকে একটি বিষয় খোলাশা করতে চাই তাদের কাছে যারা মনে করে আমি সাহাবাদের মন্দ বলি। আমার এত বড় সাহস নাই যে সাহাবাদের মন্দ বলবো। তথা কথিতদের এতিমের সম্পদ হরণ আল্লার হুকুম অমান্যকারীদের সাহাবা মনে করি না।
একটি কথা বার বারই বলি আমার এলাকার চোরের ইমামতিতে আপনারা নামায আদায় করলেও আমি সে চোরের পিছনে নামায আদায় করতে পারি না। আমি যেমনটা করি সেটা আপনার বেলাতেও ব্যতিক্রম হবে না সেটা বিশ্বাস করি। কারণ জেনে শুনে অপরাধির অনুস্মরণ কেউই করবে না। আপনাদের দৃষ্টিতে কতক সাহাবা আমি হয়তো তাদের সাহাবা ভাবতে পারি না। সাহাবা তো ছিলো প্রায় সোয়া লক্ষ শেষ ভাষনের ময়দানে।
আপনারা আমার বিরোধীতা করতেই পারেন। আমি যদি সত্য বলে থাকি তবে আপনারা আমার বিরোধীতা নয় বরং সত্যে বিরোধীতাই করছেন। আপনার দৃষ্টিতে যারা উত্তম তাদের চরিত্র আমার কাছে পরিষ্কার। আমার নবী পরিবারের দুষমন হিসাবে। যাই হোউক আমার পক্ষ থেকে আজকে এটা পরিষ্কার করার চেষ্টা করছি। হাদিস কোরান কি বলে সেটা তুলে ধরে। যারা বলবেন জাল হাদিস তারা বিরোধীতা করার চেয়ে আমার আইডি ত্যাগ করাই উচিৎ। আর যারা মনে করবেন কোরানের আয়াতের অন্য অর্থ হয়েছে তারা তাদের আল্লা নিয়ে দুরে থাকুন। কোরানের প্রতিটা আয়াত আমার আল্লার এটাতে দ্বিমত করার সাহস আমার নাই কারণ কোরানের আয়াতের বিরোধীতাকারীরা আর যাই হোউক আল্লা রাছুলের সাফায়্যাত পাওয়ার যোগ্য নয়।
কয়েকটা হাদিস নিন্মে উল্লেখ করছি আমার মতামত সহ:
১/ হুজুর সা. বলিয়াছেন, ফাতেমা আমার (দেহের) একটি টুকরা। যে তাঁহাকে অসন্তুষ্ট করিল, সে যেন আমাকে অসন্তুষ্ট করিল। বুখারী হাদীস নং- ৩৪৪১ এবং ৩৪৮৭ বাংলাদেশ তাজ কোম্পানী লি:।
উপরোক্ত হাদিসটা দেখে কলিজা কেপে যায়। শ্রদ্ধায় মন ভরে যায়। চোখে পানি চলে আসে। না জানি কোন ভুলে মা ফাতেমাকে কষ্ট প্রদানকারীদের অনুস্মরন করে আল্লা এবং রাছুলকে কষ্ট দিয়ে জাহান্নামী হয়ে যাই। আল্লা আমার জ্ঞাণ থাকতে সে সমস্ত নামধারী মুসলমানদের পক্ষে যেনো কথা না বলে ফেলি। হে মালিক তোমার প্রিয় হাবীব দোজাহানের বাদশার বিপক্ষে যেনো ইবলিশ আমাকে নিতে না পারে। এই ফরিয়াদ তোমার দরবারে।
২/ নবীজীর মৃত্যুর পর মা ফাতেমার ফেদাকের বাগান (নবীজীর ব্যক্তিগত সম্পত্তি) বাজেয়াপ্ত করা হলো। ততকালীন খলিফা সাহেবের কাছে মা ফাতেমা ফেরৎ চাইতে যায়। কিন্তু খলিফা সাহেব বলেন নবীদের কোন ওয়ারিস নাই বলে মা ফাতেমা ফিরিয়ে দিলেন। মা ফাতেমা অসন্তুষ্ট হয়ে মৃত্যুর আগ মূহুর্ত পর্যন্ত ততকালীন খলীফাদের সঙ্গে কথা বলেন নাই। এমনকি বেহেস্তবাসী নারীগনের নেত্রী, মা ফাতেমার জানাযায় ততকালীন খলীফারা সামিল হতে পারেন নাই।- বুখারী হাদীস নং- ৩৯১৬ বাংলাদেশ তাজ কোম্পানী লি:। এবং বুখারী ই.ফা- ৩৯২০।
অজ্ঞানদের ব্যপারে আমার কিছু বলার নাই। আপনাদের হয়তো মনে হচ্ছেেআবু বকর ঠিকই করেছেন। যদি আবু বকর সঠিক থাকে তবে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে মা ফাতেমা বড় অন্যায় আবদার করেছিলেন। আমি যেহেতু রাছুলের কথা অন্তরে ধারন করেছি সে সাথে হলফ করে বলছি মা ফাতেমা কোন অবৈধ আবদার করতে পারেন না। মা ফাতেমা আবু বকর এবং তার সাথী ওমর ওসমানের মুখ দর্শন করেন নাই। এখানে উভয় দল সঠিক হতে পারে না। মা ফাতেমা যে কোন ভাবেই ভুল নয়। মা ফাতেমার বাগান জবর দখল করেছিলো আবু বকর এটা সহজ ভাবেই বুঝা যায়। মা ফাতেমা বিরোধীগন আপনাদের হয়তো কষ্ট হচ্ছে মেনে নিতে। আমার কথা মানার দরকার নাই। চলুন দেখি কোরান কি বলে ওয়ারিস সম্পর্কে। আমি তো ভাল না আপনারা ভাল নিয়েই থাকেন। আর মা ফাতেমার বিরোধীদের দলে যোগ দেন। আমি আমার আল্লার প্রিয় হাবীব এবং তাঁর পরিবারেরে দুষমনদের পক্ষে যাবো না।
নবী পরিবারের দুষমনদের দল কোরানে আল্লা কি বলে সেটাও যদি না মানেন তবে আর কিছুই বলার নাই।
৮:৪১# এ কথাও জেনে রাখ যে, কোন বস্তু-সামগ্রীর মধ্য থেকে যা কিছু তোমরা গনীমত হিসাবে পাবে, তার এক পঞ্চমাংশ হল আল্লাহর জন্য, রসূলের জন্য, তাঁর নিকটাত্নীয়-স্বজনের জন্য এবং এতীম-অসহায় ও মুসাফিরদের জন্য; যদি তোমাদের বিশ্বাস থাকে আল্লাহর উপর এবং সে বিষয়ের উপর যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি ফয়সালার দিনে, যেদিন সম্মুখীন হয়ে যায় উভয় সেনাদল। আর আল্লাহ সব কিছুর উপরই ক্ষমতাশীল।
৮:৪১ আয়াতটা যখন দেখি তখন মনে হয় এই আয়াকটা বোধ হয় রাছুল ওফাতের পরে নাজিল হয়েছে। না হয় আবু বকর এই আয়াতটা দেখেন নাই। অবশ্য দেখেন নাই এটা হতে পারে কারণ তখন তো কোরান একত্রে পুস্তক আকারে ছিলো না। যদি কোরানের এই আয়াত ঠিক মতন জানা থাকতো তবে তো নবীর দান করা সম্পদ জবর দখল করার ধৃষ্ঠতা করতো না। যে আয়াত নাজিল হলো আল্লার প্রিয় হাবীরের উপর তাঁর ওয়ারিস কলিজার টুকরা মা ফাতেমার সম্পদ হরন করে কি করে?
আমার সন্দেহ পরিষ্কার হয় কোরানের শেষ আয়াত দেখে রাছুলের উপরই ওয়ারিসের আয়াত নাজিল হয়েছিলো। আল্লা রাছুলকে দিয়েই বলিয়েছেন:
৫:৩# আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।
তবে নবীর ওয়ারিশ থাকবে না কেন? আবু বকর কোন আয়াতের বলে মা ফাতেমার বাগান দখল করে নিয়ে না খাইয়ে মারার ষরযন্ত্র করেছিলো আমার মাথায় আসে না। সে আমলে খেজুরের বাগানটাই যে সম্বল ছিলো মা ফাতেমার।
কৃতজ্ঞতা দেখানোর দরকার মা ফাতেমার প্রতি। সন্তুষ্ট রাখার দরকার ছিলো মা ফাতেমাকে রাছুলকে খুশি রাখার জন্য সেদিকে কোন খেয়ালই করলো না তারা!! আল্লা শুধু একটা আয়াত দিয়েই শেষ করেন নাই। নিন্মের আয়াতে বলেছেন স্পষ্ট করে,
৫৯:৭# আল্লাহ জনপদবাসীদের কাছ থেকে তাঁর রসূলকে যা দিয়েছেন, তা আল্লাহর, রসূলের, তাঁর আত্নীয়-স্বজনের, ইয়াতীমদের, অভাবগ্রস্তদের এবং মুসাফিরদের জন্যে, যাতে ধনৈশ্বর্য্য কেবল তোমাদের বিত্তশালীদের মধ্যেই পুঞ্জীভূত না হয়। রসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।
উপরোক্ত আয়াতটা বোধ করি আবু বকর শুনেন নাই কোন দিন। এখানে এতিমদের কথাও স্পষ্ট আছে আত্মীয় স্বজন এতিম। রাছুল ওফাত হওয়ার সাথে সাথে মা ফাতেমা যে পুরাপুরি এতিম হলো ঐ এতিমের সম্পদ হরণ করা হলো। এতিমের মাল হরণকারীদের জায়গা হাশরের ময়দানে উত্তম হওয়ার সুযোগ নাই। আপনারা যদি মনে করেন দুইটা আয়াত না দেখতেই পারেন। তবে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি আরো অনেক আয়াত দেখেন নাই। জানেন না এতিমের সাথে কেমন ব্যবহার করা উচিৎ। এতিম সম্পর্কে আল্লা কি বলেছেন কোরানে
২:৮৩# এতীম ও দীন-দরিদ্রদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে।
৪:৩৬# সদয় ব্যবহার কর এতীমদের সাথে।
৯৩:৯# সুতরাং আপনি এতীমের প্রতি কঠোর হবেন না।
১০৭:২# সে সেই ব্যক্তি, যে এতীমকে গলা ধাক্কা দেয়।
২:১৭৭# সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে।
আপনাদের ঘরে কোরান আছে ভাল করে পড়ে বুঝতে চেষ্টা করুণ। এতিমের সম্পদ হরণ করলে হাশরে জাহান্নাম মিলবে। আবু বকর হয়তো এটাও বুঝতে পারেন নাই যে মুহাম্মদ সা. ওফাৎ ওয়ার পর মা ফাতেমা এমিত হয়েছিলেন।
এই অন্যায় কর্মগুলি থেকে নিজের দ্বায় এরাতে পঞ্চম খলিফা খ্যাত ওমর বীন আব্দুল আজীজ কোরানের আয়াত “৪:২# এতীমদেরকে তাদের সম্পদ বুঝিয়ে দাও।” অনুধাবন করে আল্লার ভয়ে মা ফাতেমার সম্পদ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর বংশে যারা ছিলো তাদের কাছে।
পোষ্টটি লিখার সময় আমার চোখের পানিতে লিখতে কষ্ট হচ্ছিলো বার বার আমিও যে এতিম। আমি আজও উপলোব্ধি করি। আপনারা প্রয়োজনে আমার সাথ ছেড়ে দিন। তাতে একটুও আহত হবো না। এতিমের মাল হরণকারীদের পক্ষে গুনকির্তন করা মুমিনের সাজে না। আপনারা আমাকে মিথ্যা হাদিসের ভয় দেখিয়ে লাভ নাই। আমি আমার আল্লার কোরানের ভয়ে থাকি সব সময়।
——ফকির উয়ায়ছী
বি.দ্র: এই পোষ্টটা পড়ে আমাকে শিয়া মনে করার আগে ভাবতে হবে আমি আল্লার দলিল দিয়েছি। যদি আমার আল্লা সহ আমাকে শিয়া মনে করে আমি খুশি থাকবো। যারা পড়বেন পোষ্টটি অবশ্যই মন্তব্য করার অনুরোধ রইলো। আমাকে মন্দ লিখে হলেও মন্তব্য করবেন আশা রাখি। মন্তব্য অবশ্যই যুক্তিক হতে হবে।