এজিদের রক্ত বংশের অনুসারীদের খুশি উৎযাপনের মাস মহরম। পর্ব-২/৩
=========================================================
ফকির উয়ায়ছী:
মহরমের কথা লিখলেই আহলে বায়াতের কথা চলে আসে। আর এই আহলে বায়াতগনের নাম বললেই মানুষ মনে করে আমি হয়তো শিয়া। অবশ্য শিয়ারাও এক সময় মনে করেছিলো আমি শিয়া। কারো ধারণাতে আমার কিছু যায় আসে না। তাদের ধারনা সঠিক না হলে তাদের কর্মই বিফল হবে।
তথাকথিত শিয়ারাও মুসলমানদ্বাবীদার। কিন্তু তারা ভীন্নধর্ম অনুসরনে মহরম পালন করে। ঘোড়া পায়ে দুধ ঢালা, ঢাক ঢোল বাজিয়ে তাজিয়া বানিয়ে পানিতে ফেলে সনাতনী ধর্ম অনুসারীরা যেমন মূর্তি বানিতে ফেলে। এমনকি আল্লার কোরান বিরোধী কর্ম করে নিজেদের শরিরের উপর জুলুম করে রক্ত ঝড়ায়।
আমি তথাকথিত শিয়া নই। এমনকি তথাকথিত সুন্নিও নই। তবে আমাকে যদি কেউ আলীর কট্টর শিয়াও বলে আমি নারাজ হবো না। তবে পরিবারগত ভাবে আমি সুন্নি। আল্লা এবং রাছুল সা. এর সুন্নত পালন করা সুন্নি বলতেই গর্ভবোধ করি। সুন্নতে সাহাবা (তথাকথিত) পালন করা সুন্নি নই। আমি অবশ্যই সাহাবাদের মানি তবে উত্তম সাহাবা যারা বেহেস্তে নেতা নেত্রী এংব নবী ইহকাল এবং পরকালের ভাইকে এমন সাহাবাদের চেয়ে উত্তম সাহাবা তো নাই। হাদিসে বর্নিত আছে রাছুল সা. মা ফাতেমার ঘরে গিয়েই বলতে ফাতেমা আমার সন্তানরা কোথায় তাদেরকে আমার কাছে দাও। যারা এই বিষয়টা শুনেন নাই জানে না তারা তর্ক না করে একজন ভাল খতিবের কাছে জিজ্ঞাসা করে নিবেন। তর্কের দোকানে জ্ঞান মিলে না।
এক দল আছে শুধু জামাতে নামায আদায় করার দাওয়াত দেওয়াতেই ব্যস্ত অথচ যিঁনি এই নামায আনয়নকারী রাছুল সা. এর পছন্দের কর্ম গুলির দিকে মোটেও দৃষ্টিপাত করেন না। শুধু মুসলমানদেরকেই দিনের দাওয়াত দিয়ে বেড়ান নিজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য যেরকমই থাকুক সেগুলি বাছ বিচার করার কোন প্রয়োজনই মনে করেন না। এমনকি নিজ পরিবারের কথা যেন একেবারেই ভুলে যান। দাওয়াত যে তার নিজ ঘরেই বেশী প্রয়োজন তা না করে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তারানোই যেন তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। এত সোয়াব নিয়ে যে তারা কোন বেহেস্তে যাবে সেটাই প্রশ্ন? বেহেস্তের সর্দারগন যে কে বা কারা সে নামাযীর দলে মনেও করে না। সে সমস্ত দলের অনুসারী শতকরা ৫জনও বেহেস্তের সর্দারদের নামই বলতে পারবে না। তাদের চিন্তা ভাবনা দেখে মনে হয় “নামায পড়ি, রোযা করি বেহেস্তে যাবো সরাসারি আল্লা রাছুলের ধারধারি!
ইমাম হুসাইন আ. নিজে বেহেস্তের এবং বেহেস্তের অপর সর্দারের ভাই এমনকি বেহেস্তের না্রী সর্দার সন্তান এই চিন্তাটা নামাযীরা চিন্তায়ই করে না। আল্লা পবিত্র কোরআনে একাধিকবার বলেছেন “যার যার বোঝা তাকেই বহন করতে হবে”। তাহলে দাওয়াতের সওয়াব কোথায়? যদি সে নিজের আকিদা পরিবর্তন করতে না পারে! সরকারী চাকুরীজীবি ঘুষ খাওয়া ছাড়া চলতে পারেন না, তাহলে জামাতে নামায আদায় করে কি ফায়দা? ব্যবসায়ী ভেজাল দিতে দিতে এই অবস্থায় দাড়ায় যে ভেজাল না দিলে ব্যবসাই করতে পারেন না। তাহলে এই জামাতের নামাযের ফায়দা কি? ইসলাম প্রচারের জন্য আলেম হুজুর সাহেবগন ফ্রীতে তো কোন কাজ, কোন অনুষ্ঠান/ ওয়াজ মাহফিল এমনকি মুরদার জানাযাও পড়ায় না। তবে এই দাওয়াত নামাযের ফায়দা কি? এখানে একটি হাদিস মনে করে দেওয়া প্রয়োজন মুসনাদে আহমদ হাদিস পুস্তকে উল্লেখিত শক্তিশালী হাদিস “উম্মু দারদা রা. বলেন, একদিন আবূদ দারদা রা. রাগাম্বিত অবস্থায় ঘরে প্রবেশ করলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কে আপনাকে রাগালো? তিনি বললেন “আমি এদের মধ্যে (তাঁর সমসাময়িক মানুষদের মধ্যে) মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোন নিয়ম-রীতি দেখতে পাচ্ছি না। শুধু এতটুকু দেখতে পাচ্ছি যে, এরা জামাতে নামায আদায় করে।” আপনারা আমার লেখায় রাগ হবে না। চিন্তা করে দেখবেন এই জাত কি বর্তমানে নাই? নামায তো ইয়াজিদ এবং তার বাহিনী আদায় করছে। তাদের দলই বড় ছিলো।
রাছুল সা. বলেছেন হুজুরিল কাল্ব ছাড়া নামায নাই। তবে বেহেস্ত প্রত্যাশি এই সব অবৈধ পয়সার অধিকারীদের কাল্ব কিভাবে “হুজুরিল কাল্ব” হয়? সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে নামায তো পড়া হয় আল্লাকে সেজদা দেওয়ার উদ্দেশ্যে। নামাযে দাড়িয়ে সূরা ফাতেহায় আমরা বলি (ইয়া’কা না’বুদু, ওয়া ইয়া কানা’সতাইন) অর্থ- “আমরা কেবল তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।” আল্লা তৎক্ষনাত কিছু বলেননা তাই প্রতি ওয়াক্তে ওয়াক্তে আল্লার সাথে প্রত্যারনা করা হচ্ছে।
একবার চিন্তা করেন দেখবেন আপনার অধিনস্ত কোন মানুষ কিছু চুরি করার পর মাফ চায় আপনি কতবার মাফ করবেন। অপরাধিকে আপনি এই প্রশ্ন কি করবেন না যে, আর কতবার মাফ করবো? আল্লা জিজ্ঞাসা করে না এবং সাথে সাথে কোন বিচার করে না বিধায় প্রতি ওয়াক্তেই প্রত্যারনার সাহস পায় মানুষ। আমি অনেক কথাই এনেছি এই পোষ্টে কারণ এই দল গুলির অধিকাংশই সঠিক ভাবে মহরম পালন করে না।
রাছুল সা. এর মেরাজের আগে ১০ই মহরমের রোজা ফরজ ছিল। মেরাজে রমজানের ৩০ রোজা ফরজ হওয়ার পর এই রোজাটা নফল হিসাবে রাছুল সা. পালন করতেন ওফাতের আগ পর্যন্ত। ১০ই মহরমের একটি রোজার পরিবর্তে ৩০ রোজা ফরজ হয়েছে অর্থাৎ মহরমের ১রোজা সমান ৩০রোজার সোয়াব বুঝানোর জন্য সেটা বললে ভুল হবে কি? যখন ১০ই মহরমের রোজা ফরজ ছিলো। এটা নফল হওয়ার পরও এই রোজার সোয়াবের কম হওয়ার কোন সুযোগ নেই আমার বিশ্বাস।
————————–চলবে