আজঃ বুধবার | ২৯শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৫ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
Home / ফকির উয়ায়ছী / প্রবন্ধ / ঈমান এনেছি কান কথায়

ঈমান এনেছি কান কথায়

মাথা ভ‌রে রে‌খে‌ছি আ‌লে‌মের কথায়,

কোরা‌ন দ‌লিলে কি আ‌সে যায়?

এমনদের জন্য আমার আ‌লোচনা নয়।

আল্লা ব‌লে‌ন সালাত কা‌য়েম কর। আ‌লেমগন ব‌লে সালাত/নামায পড়। সালাত আরবী শব্দ বাংলা অনুবাদকগন ভাষার খিচুড়ি পাকিয়েছেন বাংলার সাথে ফার্সী মি‌লি‌য়ে। নামায শব্দটা যে একটা ফার্সী শব্দ এটা অ‌নে‌কেরই জা‌না নাই। এ শব্দটা‌কে বাংলা শব্দ ব‌লেই ম‌নে ক‌রেন।

সালাত আরবী শব্দটির বিভিন্ন বাংলা অর্থ আছে। যেমন পুজা, উপাসনা, প্রার্থনা, স্মরণ। আরবী পড়ুয়া আলেমদের নিকট পুজা, উপাসনা, প্রার্থনা এই শব্দগুলি হিন্দু শব্দ ব‌লে বি‌বে‌চিত। অর্থাৎ ব্যবহার উপযোগী নয়। কিন্তু সালাত বাংলা ‘স্মরণ’ শব্দটাই আমার নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয়। অনুবাদক সাহেবগন যদি স্মরণ শব্দটি ব্যবহার করতেন আকিমুস সালাত স্মরণ প্র‌তিষ্ঠা কর লিখ‌তেই হ‌তো। অন্যথায় পুজা পড়।

উপাসনা পড়।

প্রার্থনা পড়।

স্মরণ পড়।

আরবীর শ‌ব্দের স‌ঠিক বাংলা অনুবাদ দি‌লে গুজা‌মিল সহ‌জেই সাধারন মানুষ ধ‌রে ফেল‌তে পার‌তো। এজন্য আরবী সালাত শ‌ব্দের বাংলা অনুবা‌দে ফার্সী নামায শব্দ ব‌সি‌য়ে তা‌দের পা‌ন্ডিত্য জা‌হির ক‌রে‌ছেন।

এখানে বাংলা শব্দ প্রয়োগ করলে ভেজালে পর‌তে পা‌রেন বু‌ঝেই বাংলা শব্দের পরিবর্তে ফার্সী শব্দ এটা প‌রিষ্কার।

পড়া আর করা‌ শব্দ দুটির ক্রিয়া কর্মে অ‌নেক ব্যবধান। অ‌তি অল্প লোকই সেটা চিন্তা করেন। শব্দভে‌দ তালা‌শে স‌ঠিক শিক্ষা মিল‌বে আমার বিশ্বাস।

কোরা‌নে ৮২ আয়া‌তে বলা আ‌ছে “আ‌কিমুস সালাত ওয়া তুজ যাকাত” আয়া‌তে স্পষ্ট সালাত যাকাত সাথ সাথ পালনীয়। আলেম সাহেবগন যাকাত যেহেতু বৎসরে একবার করবেন আমি সে ব্যপারে কিছু বলতে চাচ্ছি না। শুধু বলবো আল্লার বিধানের বাইরে যাওয়ার আমার সুযোগ নাই।

যাকাত যখন আলাদা তারা করছে আমিও সালাত নিয়েই আলোচনা করছি। “আকিমুস সালাত” অর্থাৎ স্মরণ প্রতিষ্ঠিত কর। এটা হুকুম আল্লার নি‌জের সমস্ত দাশের প্র‌তি। আল্লার এই বিধান পালনের নিদৃষ্ট সময় হচ্ছে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত। প্রতিষ্ঠা করতেই হবে যে স্মরণ, এই স্মরণ সম্পর্কে মানুষ চিন্তা ক‌রে না!

এ‌দের চিন্তা হলো কপালে কে কত বড় কালো দাগ/ ঠোয়া ফেলতে পারে। স্মরণ করা সম্পর্কে আল্লা কত কঠিন করে বলেছেন সুরা বাকারা আয়াত

২০০# “আর অতঃপর যখন হজ্জ্বের যাবতীয় অনুষ্ঠানক্রিয়াদি সমাপ্ত করে সারবে, তখন স্মরণ করবে আল্লাহকে, যেমন করে তোমরা স্মরণ করতে নিজেদের বাপ-দাদাদেরকে; বরং তার চেয়েও বেশী স্মরণ করবে।”

আল্লাকে স্মরণের ধরন বাপ দাদার চেয়েও বেশী করে স্মরণ করতে বলেছেন। এটা যে হজ্জের একটা বিধান। যদি স্মরণ করতে না পারেন লোক দেখানো হাজ্বী আপনী বলতে পারেন নি‌জে‌কে আল্লার কাছে কতটুকু মূল্য আ‌ছে নি‌জে‌কে প্রশ্ন কর‌লে উত্তর মিল‌বে। আপনার কাছে যতটুকু মূল্য আপনী নিজে দিতে পারবেন তার চে‌য়ে বেশী মূল্য আল্লা দি‌বেন কেমন ক‌রে?

আমাকে যদি বলেন তোমার বাবাকে স্মরণ কর। আমি বলবো আমার বাবা যখন মারা গেছেন আমার বয়স তখন ২১দিন ছি‌লো। বাবার কোন সৃতি আমার নাই। স্মরণ করবো কি করে? আপনী অবশ্যই মে‌নে নি‌বেন। আমি তো দেখি নাই কথা একটাই।

আপনা‌কে য‌দি বলা হয় দাদা‌কে স্মরণ করুণ। আপনী বল‌বেন আমার বাবার ছোট বয়‌সে আমার দাদা মারা গেছেন আমি দাদাকে স্মরণ করবো কিভাবে? আ‌মি মে‌নে নি‌বো দাদা‌কে দেখেন নাই স্মরণ কর‌বেন কি ক‌রে?

মা‌লিক আল্লা যা‌কে আপনী হাজ্জী দে‌খেন নাই তাঁকে স্মর‌ণের কথা এ‌লে আপনা‌দের মাথায় কেন আ‌সে না? আপনারা কেন মনে করেন মুখে বার বার বলা মানেই স্মরণ করা হয়। মু‌খে বলা মা‌নেই য‌দি আল্লা‌কে স্মরণ করা হয়। ত‌বে আল্লা যাকে বোবা বা‌নি‌য়ে‌ছে সে আপনার মতন স্মর‌ণ কর‌বে কি ক‌রে? আর যে মানুষ‌টির কোন কার‌ণে বাকরুদ্ধ হ‌য়ে গে‌ছে তার স্মরণ হবে কি ক‌রে? আল্লার বিধান বুঝতে কর্ম সাধন করতে পারলেই নেকী পাবেন নচেত লোক দেখানো কর্মে ফল শুন্য এটা কোরান পঠনে স্পষ্ট।

আপনাদের জ্ঞান দেওয়া আমার লেখার উদ্দেশ্য নয়। অনুসন্ধানী করার জন্য লিখি। আমি লিখি আপন মালিককে নিয়ে একটু ভাবনা চিন্তা করার জন্য। ইচ্ছা অনিচ্ছায় মালিকের দাস বলা লোকগুলি মালিকের প্রতি যেনো কৃতজ্ঞ হয় সে চেষ্টা করি মালিককে খুশি করার জন্য।

শ‌রিয়‌তের আ‌লে‌ম মুসু‌ল্লি‌দের সালাত কা‌য়েম দি‌নে পাঁচবার। মা‌রেফ‌তের অ‌ধিকাংশ পীর মু‌রি‌দের সালাত সীমিত সময় ব্য‌ক্তি ধ্যা‌নে কা‌য়েম বলে এটাও অজ্ঞতার। শরিয়‌তে অনুসারীগন আল্লার হুকুম পালন কর‌ছেন না। আর মা‌রেফ‌তের সে সমস্ত অনুসারীরা তো মুশ‌রি‌কে রূপান্ত‌রিত হ‌চ্ছে সনাত‌নি ধ‌র্মের লোক‌দের মতন।

আ‌লেম‌ এবং তথাক‌তিত পীর‌দের কথা কানে শুনে ম‌স্তি‌ষ্কে তালা দেওয়া ঈমান আনাদের দল থেকে টেনে বের করে চক্ষু দিয়ে দেখে, বিবেক দিয়ে অনুধাবন করা ঈমানদারদের দলে আনার চেষ্টা করছি মাত্র। আপন দৃ‌ষ্টি‌তে যে না দখ‌বে সে স্মরণ কর‌তে পার‌বে না। আল্লা কোরান ব‌লে‌ছেন “অন্ধ আর চক্ষুষ্মান সমান নয়?

চক্ষুওয়ালাগন মরার আ‌গে চক্ষু না খুল‌লে স্মরণে ব্যর্থ হ‌য়েই কব‌রে যে‌তে হ‌বে। আল্লার হুকুম না মে‌নে কব‌রে যা‌বেন আল্লা কোথায় রাখ‌বেন বুঝ‌তে অসু‌বিধা হওয়ার কথা নয়। কা‌জেই সময় থাক‌তে চিন্তা করুণ।

#ফকির_উয়ায়ছী

About Fokir Owaisi

আরও দেখুন

ফানা ফিশ শাইখ অর্থাৎ পীরের হয়ে যাও

ফানা ফিশ শাইখ অর্থাৎ পীরের হয়ে যাও ফকির উয়ায়ছী: মারেফতের মুরুব্বি বুজুর্গদের থেকে শুনা একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *