ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের সাথে ভেজাল জড়িৎ হয়েগেছে- ৪র্থ পর্ব
================================================
ফকির উয়ায়ছী:
৪ নং যাকাত:
যাকাত শব্দের সাথে আর্থিক টাকা পয়সার সম্পর্ক আছে কোরআনে তা বুঝা যায় না। কারণ যাকাত শব্দের অর্থ পাওয়া যায় পবিত্রতা। একটি আয়াত এখানে কোট করছি পড়লেই বুঝা যাবে যাকাত যে শুধুই অর্থ নয়। সূরা মুজাদালাহ ৫৮:১৩# “তোমরা কি কানকথা বলার পূর্বে সদকা প্রদান করতে ভীত হয়ে গেলে? অতঃপর তোমরা যখন সদকা দিতে পারলে না এবং আল্লাহ তোমাদেরকে মাফ করে দিলেন তখন তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর”।
আমরা সকলেই জানি সদকা সামান্য টাকা এমনকি পয়সাও হতে পারে; কোন নির্ধারিত পরিমান নাই। হাদিসে বর্ণিত মালের যাকাত তো ৪০ ভাগের এক ভাগ বা শতকরা ২.৫ শতাংশ। ভুল বুঝবেন না কোরানে ২.৫% যাকাতের হুকুম কোন আয়াতে পাইনি আজও। উপরোক্ত আয়াতে আল্লা কি বললেন তোমরা সদকা দিতে পারলে না। তখন যাকাত দাও। আমি গরীবের উপর আল্লা জুলুমের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছেন? তা মোটেই না। আল্লা সহ্যের অতিরিক্ত কষ্ট দেন না। উক্ত আয়াতে যে যাকাতের কথা বলা হয়েছে সেটা কোন ক্রমেই অর্থ হতেই পারে না। বর্তমান সমাজে শরিয়তের এবং মারেফতের দায় দিয়ে ধর্ম ব্যবসায়ী আলেম সাহেব এবং পীর সাহেবগন যেভাবে যাকাতের মাল ভক্ষন করে চলছেন সেদিকে সচেতনরা খেয়ালই দিচ্ছেন না। এই সব ধর্ম ব্যবসায়ীরা হাদিস দেখিয়ে চলছে “ইন্নাল উলামউ ওয়া রাসাতুল আম্বিয়া”- অর্থাৎ “নিশ্চয়ই আলেমগণ হলো নবীর ওয়ারিশ।” এই হাদিস দিয়ে মারেফতের পীর সাহেবরা এবং শরিয়তের আলেমগন নবীর ওয়ারিশ অর্থাৎ বংশধর সেজে বসেন মুরিদদের কাছে। কিন্তু হাদিসে পাওয়া যায় রাছুল সা. এর পরিবারের জন্য যাকাতের মাল খাওয়া হারাম। মনে রাখবেন যে সমস্ত আলেম এবং পীর সাহেবগন যাকাতের মাল গ্রহন ভক্ষন করবেন তারা রাছুল সা. এর ওয়ারিশ তো নয়ই বরং ওলিল আমর (পীর) অর্থাৎ নেতা হওয়ার যোগ্য নয়। খোজ করে দেখুন বাংলাদেশের বড় বড় পীরের দরবার গুলিতে ফসলের যাকাত আদায় করা হয়। প্রতি মন ফসলে ১কেজি যাকাত হিসাবে। অথচ নিন্মের হাদিসটা চোখের সামনে পরলে চোখ বন্ধ করে রাখে তারা সচেতনদের জন্য প্রদান করছি।
বুখারী হাদীস-১৩৯৪# একদিন হযরত হাসান আ. যাকাতের একটি খেজুর বালক বয়সে মুখে দিয়ে ছিলেন। নবীজী তাঁর নাতীকে থু- থু করে সবটুকু ফেলে দিতে বলেন যাতে মিষ্টি স্বাদ তার গলায় না নামে, যার অর্থ দাড়ায় নবীজীর পরিবারের জন্য যাকাতের মাল খাওয়া যায়েজ ছিল না।
ইসলামের প্রথম ৩টি স্তম্ভ পার করেই যেমন ৪র্থ স্তম্ভ পালন করতে হয়। কিন্তু এটা বাদ দিয়ে অনেক লোক দেখানো ইবাদতকারী ছুটে পাচ নং স্তম্ভ পালন করার উদ্দেশ্যে। এই প্রসঙ্গে ৫নং পর্ব এবং শেষ পর্বেই আলোচনা করবো।
আমার সংস্কারের কথা বলার হক তো আছেই শুনবে কে? সংস্কারেরর ক্ষমতা থাকলে অবৈধ উপার্জনকারীদের জন্য যাকাত/ফেতরা দেওয়া নিষেধ করতাম এবং যাকাত প্রদানের আগে যাকাত প্রদানকারী ব্যক্তি থেকে হালাল রুজির স্বীকারোক্তি নামা জমা দিতে বলতাম। এই দিকে চিন্তা তো করেই না কেউ। যাকাত প্রদানকারীরা মনে করে অবৈধ টাকার ভাগ ২.৫% হিসাবে আল্লার নামে দিয়ে বাকী টাকা বৈধ হবে। এতে মনে হয় আল্লাও অবৈধ টাকা গ্রহন করবেন। (নাউজুবিল্লাহ)
——————চলবে