আজঃ বৃহস্পতিবার | ৩০শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
Home / ফকির উয়ায়ছী / প্রবন্ধ / ইফতারের সময় সূচী নিয়ে শিয়াদের বিভ্রাট চিন্তা করুণ আপন জ্ঞানে

ইফতারের সময় সূচী নিয়ে শিয়াদের বিভ্রাট চিন্তা করুণ আপন জ্ঞানে

ইফতারের সময় সূচী নিয়ে শিয়াদের বিভ্রাট চিন্তা করুণ আপন জ্ঞানে
================================================
 
প্রথম রোযার দিন লিখেছিলাম শিয়াদের ইফতারের সময় নিয়ে কিছু লিখবো। শরীর খারাপ থাকার জন্য লিখতে দেড়ি হলো শুরুতেই ক্ষমাপ্রার্থী।
 
ইফতারের সময় নিয়ে বিভ্রাট ফেসবুকের বদৌলতে ব্যপক প্রকাশ পাচ্ছে বিগত কিছুদিন যাবৎ। এই আলোচনা করতে হলে আরো কিছু আলোচনা জরুরী হয়ে যায়। গত বৎসর আমার অনেকে বলেছেন আমি কিছু প্রকাশ্যে লিখি নাই। তাদের মধ্যে এক বড় ভাই সকলের পরিচিত মুখ Masud Parvez Sohel Rana দাদা ফোনে আমার সাথে অনেক আলোচনা করেছেন। এবং ফোনে অনেকেই আলোচনা করেছেন আমার সাধ্য অনুযায়ী বুঝিয়েছি যে তাদেরটা তাদের পালন করতে দেন। এবারও অনেকে বলেছে তার মধ্যে কয়েকজন মারেফতের অনুসারী বলেই লিখতে বাধ্য হয়েছি।
 
প্রথমেই বলতে হয় আল্লা রোযার কথা বলেছেন ঠিকই কিন্তু পালন করে দেখিয়েছেন মুহাম্মদ সা.। রোযা ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি রাছুল সা. এর দেখানো পদ্ধুতির উপর প্রতিষ্ঠিত। পানাহার থেকে বিরত এবং দিনের বেলা স্ত্রী সহবাস পরিত্যাজ্ঞ এর মাধ্যমেই পরিপূর্ণতা পায় শরিয়তের রোযা। কোরানের দুটি আয়াত উল্লেখ করছি আপনাদের জন্য:
 
২:২৬# “এ দ্বারা আল্লাহ তা’আলা অনেককে বিপথগামী করেন, আবার অনেককে সঠিক পথও প্রদর্শন করেন।”
 
৩৮:২৯# একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে।
 
উপরোক্ত আয়াতে ২:২৬ কোরান পড়ে কেউ বিভ্রান্ত হয় আবার সঠিক হয়। ৩৮:২৯ পরিষ্কার বুঝা যায় কোরান অনুধাবন করে বুদ্ধিমানরাই। কাজেই অন্যের জ্ঞানে আল্লার ধর্ম বুঝা যায় না প্রয়োজন আপন জ্ঞান। রাছুল সা. কোন এক যুদ্ধে হযরত আলীকে পাঠানোর সময় বলেছিলেন তাদের কাছে কোরানের ব্যাখ্যা করো না। তাদের কাছেও তাদের ব্যাখ্যা মজবুত।
 
আমি আয়াত গুলি উল্লেখ কেন করেছি সেটা বোধ করি পরিষ্কার হয়েছে। নিজ জ্ঞানে না বুঝলে নানা মুনির নানা মতে বিভ্রান্ত হতেই পারেন।
 
রোযার মাস আগমনের কিছুদিন পূর্ব থেকেই শিয়া মাযহাবের লোক সকল সূরা বাকারার-১৮৭ আয়াত দিয়ে প্রচার শুরু করে ইফতারের সময় নিয়ে। রাত্র হলে ইফতার করতে হবে। তাদের মতাদর্শন তারা পালন করুক তাতে সুন্নিদের কি যায় আসে। তারা কোরানের দলিল দেয়।
 
২:১৮৭# পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত।
 
যদি তাদের এই দলিল বিনা বাক্য ব্যয়ে মেনে নিলে জানা জরুরী হয় তারা কি ইফতার করেন মাগরিবের পর নাকি এশার পর?
 
আপনাদের জানা আছে কি শিয়া মাযহাবের অনুসারীরা দিনে কয়বার আযান দেয়? কয় ওয়াক্ত নামায আদায় করে? অনেকেরই জানা নাই।
 
শিয়াগন নামাযের আহবান দেয় সাড়াদিনে ৩বার। ফযর, যোহর+আসর, মাগরিব+এশা। তিনবার মসজিদে গিয়ে ৫ ওয়াক্ত নামায আদায় করে জামাতের সাথে। কিন্তু মসজিদ ব্যতীত তাদের কেউ কেউ আলাদা ৫ সময়ে নামায আদায় করেও থাকে।
 
রমযান মাসে সুন্নিদের মাগরিবের আযানের ১৪ মিনিট পর তাদের মাগরিবের আযান হয়। সেটাই তাদের ইফতারের সময়কাল। বাসা বাড়িতে থাকা মানুষরা ১৪মিনিট পর ইফতার করে। কিন্তু ইমাম বাড়াগুলিতে এশার নামায শেষ করে পরে ইফতার করে।
 
উল্লেখ বিষয় হচ্ছে এদের মাথাতেও চিন্তাশীলতার অভাব। কারণ এদের কেউ কেউ এশার নামাযের সাথে সালাতুল বিতর আদায় করে ফেলে। আবার কেউ কেউ বিতর বাকী রাখে তাহাজ্জুদ নামায এর পর আদায় করবে বলে। আপনাদের সকলেরই জানা হচ্ছে সালাতুল বিতর ওয়াজিব এটা দিনের শেষে আদায় করারই বিধান। যারা বিতর উয়াজিব আদায় করছেন পরে ইফতার করছেন সেটা কোন দিক থেকে যুক্তিযুক্ত হয়? রোযা তো পরিপূর্ণ হয় ইফতারের মধ্য দিয়েই। ওয়াজিব শেষ করে ফরয করছেন আক্কলের ঘরে তালা দিয়ে সেটা মানুষের উপর চাপানোর চেষ্টা করছেন। নিজেদের অবস্থান ঠিক করা যে জরুরী।
 
হাদিসে পাওয়া যায় আমার রাছুল সা. দিনের শেষে রাত্রি আহবানের শুরু মাগরিবের আযানের সাথে সাথে দিনের কর্ম ফরয সম্পাদনের জন্য ইফতার করেছেন। সেটা এভাবেই চলে এসেছে হাজার বছর ধ‌রে। আপনারা রোযার মাসে ইফতারের সময়কাল নিয়ে ফেৎনা সৃষ্টি করছেন। আপনাদের মাযহাবের কর্ম আপনাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা জরুরী। এ ফেৎনার ম‌ধ্যে বলে দেওয়া উচিৎ শিয়াদের ইফতারের সময়। কারণ আপনাদের সাড়া বৎসরের মাগরিব সুন্নিদের সাথে মিল নেই। আপনাদের নামাযের ওয়াক্ত সুন্নিদের নামাযের ওয়াক্ত পূর্বে হয়। রমযান এলে সেটার ব্যপ্তয় কেন ঘটে?
 
রোযার কালে ইফতার মিলানোর বৃথা চেষ্টা করা কিভাবে যৌক্তিক হয়? আপনারাই যা ছাপিয়ে প্রচার করছেন তা আপনারাই মানের না। আপনারা বেশী উপোস করেন নিজেদের ক্যালেন্ডার ছাপাচ্ছেন কোন মস্তিষ্ক নিয়ে যেটা পালন আপনারাই করেন না। স্ববিরোধী কর্ম কান্ড বিবেকবানদের জন্য নয়। আমি ২০১৮ সালের ২টি ক্যালেন্ডারের চিত্র প্রদান করছি সেটা দেখলে পাঠকদের পরিষ্কার হবে। এবং সে সাথে নিন্মের দেশ গুলি কথাও চিন্তা করা দরকার যেহেতু আল্লার বিধান একটাই।
 
নরও‌য়ে, কানাডা, আইসল্যান্ড, সুই‌ডেন এবং ফিনল্যান্ড গর‌মের দি‌নের অ‌নেক সময় সূর্য ডো‌বে না। ঠিক তেমনি শী‌তের দি‌নে দীর্ঘ সময় সূ‌র্যের দেখা পাওয়া যায় না।
 
উপ‌রোক্ত দেশ গু‌লি‌তে শিয়ারা অবস্থানের সময় নিন্ম আয়াত কিভা‌বে পালন কর‌বে?
 
২:১৮৭# পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত।
 
ইমাম বারার সাথে মারেফতের কিছু বিভ্রান্ত পীর এবং অনুসারীরা যুক্ত হয়ে এই ফেৎনা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। তারা আদো জানে না শিয়ারা সাড়া বৎসর কিভাবে নামায পালন করছে। আমি বেশী কিছু লিখলাম না পোষ্ট বড় হলে পাঠক পড়তে পড়তে আগ্রহী হয় না। কাজেই আমি যে বিষয়গুলি উল্লেখ করেছি সেগুলি নিয়ে চিন্তা করলে পোষ্টে ছবি দুটি ভাল করে খেয়াল করলে অনেক কিছুই পরিষ্কার হবে আশা রাখি। আর যদি আরো আলোচনার ইচ্ছা থাকে আমার কথাগুলি যাচাই করে দেখুন শিয়াদের সাথে। এবং যুক্তি যুক্ত আলোচনায় আসুন। আর মারেফতের অনুসারীরা যারা এটা নিয়ে শিয়ার পক্ষ নিয়ে কথা বলবে। তারা আরো অনেক কিছু শিয়াদের দলিল দিয়ে পালন করে। উয়ায়ছীদের দৃষ্টিতে যেহেতু তথাকথিত শিয়ারা মুসলিমই নয় সেহেতু কখন খেলো। কোথায় মুতা করলো সেটা দেখা জানার ইচ্ছাও নাই।
 
——-ফকির উয়ায়ছী
 
বি.দ্র: মারেফতের অনুসারীরা রোযা করে সাড়া বৎসর নফস আম্বারা‌কে বসে রাখার চেষ্টায়।তবে শরিয়তের রোযার দিকে উয়ায়ছীদের মতন কঠিন অবস্থানে অন্য তরিকতের মানুষ নয়। কিন্তু নক্সা বন্দিয়ারা শরিয়ত ব্যাপক পালনকারী হলেও তাদের মধ্যে মারেফত বলতে আল্লার কোরান বিরোধী মুরশিদের চেহারা ধ্যানে এবং গান বাজনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ দেখতে পাওয়া যায়।

About Fokir Owaisi

আরও দেখুন

এজিদের রক্ত বংশের অনুসারীদের খুশি উৎযাপনের মাস মহরম। পর্ব-১

এজিদের রক্ত বংশের অনুসারীদের খুশি উৎযাপনের মাস মহরম। পর্ব-১ ====================================================== ফকির উয়ায়ছী: আগামী ২১লা সেপ্টেম্বর …

২ comments

  1. আলহামদুলিল্লাহ! সুন্দর আলোচনা কোন সন্দেহ নাই ।আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যা বুঝি মহান আল্লাহ মানুষ কে বিভ্রান্তির মধ্যে কখনও ঠেলে দেন নাই বরং মানুষই মানুষ কে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে ফায়দা লুটতে ঘাপটি মেরে বসে আছে। শিয়ারাও ঐরুপ। তাই আমাদের উচিত হবে কোরআন হাদিস মোতাবেক বিজ্ঞ তাফসির বিশারদের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী আমল বা অনুসরণ করা। যাহা আপনার সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ দেখা যায়। ধন্যবাদ কস্ট করে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি তুলে ধরেছেন, ভালো থাকবেন সালাম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *