আজঃ বৃহস্পতিবার | ৩০শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
Home / ফকির উয়ায়ছী / প্রবন্ধ / নবী ও রাছুলের মধ্যে পার্থক্য, এবং শেষ নবীর ধারা সংক্রান্ত আলোচনা-২

নবী ও রাছুলের মধ্যে পার্থক্য, এবং শেষ নবীর ধারা সংক্রান্ত আলোচনা-২

আল্লার রাছুল সম্পর্কিত তথ্য এবং রাছুল প্রেরণের কিছু বিধান
================================================
ফকির উয়ায়ছী:

প্রথম পর্বের পর

:১৮২# “যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে আমার আয়াত সমূহকে, আমি তাদেরকে ক্রমান্বয়ে পাকড়াও করব এমন জায়গা থেকে, যার সম্পর্কে তাদের ধারণাও হবে না।

কিছু উদভ্রান্ত মারেফতের অনুসারী পিরকে রাছুল মনে করেন।এতে পির সাহেবেও জমা করেই ফায়দা উঠান। তার সকল মুরিদ অনুসারীদের মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে খাওয়ার সুবিধা পান। আল্লা এবং রাছুল সা. এর কথা বাদ দিয়ে ব্যক্তি বিশেষের কথা দিয়েই ব্যবসা চালাচ্ছে পিরগিরি। আদম পাপীষ্ঠ দলের একজন। বান্দার কথার উপর আল্লা কথার উপর যারা মূল্যদেয় তারা আর যাই হোউক আল্লার ক্ষমা পাবে না। আল্লা বলেছেন খাতামান নাবী অর্থাৎ নবি আর আসবে না। কোরআনে আল্লা উল্লেখ করেছেন।

৩৩:৪০#“মুহাম্মদ তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী।

স্বার্থনেশী লোক গুলি বলেন রাছুল রোজ কেয়ামত পর্যন্ত আসতেই থাকবে। যুগ যুগ ধরে মানবের আগমন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত রাছুল প্রেরন চলতেই থাকবে। আয়াতটির মধ্যে আল্লা বলেছেন ভাল করে লক্ষ্য করে দেখবেনতিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবীপরিষ্কারই বুঝা যায় মুহাম্মদ সা. হচ্ছেন শেষ নবী এবং রাছুল নামক পদবী প্রাপ্ত। একই ব্যক্তি এবং তিঁনি শেষ প্রেরিত যার পর আর কোন নবি এবং রাছুল আসবেন না আল্লার কথা মতন। এমনকি গাদীরে খুমের শেষ ভাষণে আল্লা আয়াত নাজিল করলেন

:৬৭# “হে রসূল, পৌছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে। আর যদি আপনি এরূপ না করেন, তবে আপনি তাঁর পয়গাম কিছুই পৌছালেন না।

যদি রাছুল আরও পাঠাতেনই তবে আল্লা উক্ত আয়াতে কেন এমন করে তাড়া দিবেন? মারেফতের সে সব অনুসারীদের কাছে আমার জানার আগ্রহ যারা মনে করেন রাছুল আসতেই থাকবেন!

আর যদি রাছুল আসবেনই সেক্ষেত্রে আল্লার আইন তো একই রকম হবে। আল্লা বলেছেন। সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত

১৭:৭৭# “আপনার পূর্বে আমি যত রাছুল প্রেরণ করেছি, তাদের ক্ষেত্রেও এরূপ নিয়ম ছিল। আপনি আমার নিয়মের কোন ব্যতিক্রম পাবেন না

উক্ত আয়াত মোতাবেক কিছু নিয়মনীতি পালন তো হতেই হবে। নিন্মে কিছু নমুনা উল্লেখ করছি চিন্তার জন্য:

() আল্লা থেকে অহি পেতে হবে
——————————-
৪২:৫১#“ওহীর মাধ্যমে অথবা পর্দার অন্তরাল থেকে অথবা তিনি কোন দূত প্রেরণ করবেন, অতঃপর আল্লাহ যা চান, সে তা তাঁর অনুমতিক্রমে পৌঁছে দেবে। নিশ্চয় তিনি সর্বোচ্চ প্রজ্ঞাময়।

()আল্লা থেকে প্রাপ্ত অহির অনুসরন করতে হবে
———————————————–
:৫০আমি তো শুধু ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে। আপনি বলে দিনঃ অন্ধ চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না?”

() আল্লা থেকে আসমানি কিতাব পেতে হবে এবং উক্ত কিতাবই প্রচার করতে হবে।
———————————————————————————-
৬৯:৪০৪৮# “নিশ্চয়ই এই কোরআন একজন সম্মানিত রসূলের আনীত।এবং এটা কোন কবির কালাম নয়; তোমরা কমই বিশ্বাস কর।এবং এটা কোন অতীন্দ্রিয়বাদীর কথা নয়; তোমরা কমই অনুধাবন কর।এটা বিশ্বপালনকর্তার কাছ থেকে অবতীর্ণ।সে যদি আমার নামে কোন কথা রচনা করত, তবে আমি তার দক্ষিণ হস্ত ধরে ফেলতাম, অতঃপর কেটে দিতাম তার গ্রীবা।তোমাদের কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না। এটা খোদাভীরুদের জন্যে অবশ্যই একটি উপদেশ।

() প্রত্যেক রাছুলকে পুরুষই হতে হবে
—————————————
১২:১০৯# “আপনার পূর্বে আমি যতজনকে রসূল করে পাঠিয়েছি, তারা সবাই পুরুষই ছিল জনপদবাসীদের মধ্য থেকে। আমি তাঁদের কাছে ওহী প্রেরণ করতাম।

আমার ব্যক্তিগত মতামত। এতদিনের শিক্ষা যা পেয়েছি কোরআনের ভিতর থেকে আগামী রাছুল আসার আগাম বার্তা থাকাটাও জরুরী। যেমন পূর্বের গ্রন্থগুলির মধ্যে নবী আসার আগাম বার্তা পাওয়া গিয়েছে। তেমন করে কোরআনেও মুহাম্মদ সা. এরপর যে ব্যক্তি আসবেন তার নাম থাকা জরুরী। উম্মতে মুহাম্মদির জন্য যেমন কলেমা। তেমন একটি কলেমা থাকাতেই হবে। যদি নতুন রাছুল আসেন সে সাথে কিতাব আসে তবে তারা উম্মতে মুহাম্মদি বলার দ্বাবী রাখে না এমনকি মুসলমান বলতেও পারে না। যেমন রাছুল সা আসার পর মুসা নবী মুসলমান হলেও তার গোত্র ইহুদী। কাজেই চিন্তা করা দরকার।

আসলে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলে সহজেই বুঝা যায়। সমস্ত নবীগনই আরশে মুয়াল্লায় আল্লার নামের সাথে মুহাম্মদ সা. এর নাম যেহেতু দেখে এসেছিলেন জমিনে আসার পূর্বেই। সেই মুহাম্মদ সা. যেহেতু এসে গেছেন আর কোন কিছুই বাকী নেই। এই সব যারা বলে মানে তারাও এক ধরণের ওহাবী খারেজি। আল্লার এবং নবীর বাণী পীর নামক লোকগুলি এবং তার অনুসারীরা পুরাপুরি ভাবে মানতে পারলে এমন চিন্তা করতো না।

তথাকথিত বর্তমান পীর সাহেবগনদের মধ্যে অধিকাংশই আওলাদে রাছুল দ্বাবী করছেন। রাছুলের পরিবারের জন্য যাকাতের মাল বৈধ নয় সেটা তারা না মেনে ফসলের যাকাত উঠাচ্ছেন গরীবদের থেকে নেক ক্ষেত্রে বাধ্যতা মূলকভাবে। এরাও নাকি আবার রাছুল এদের অনুসারীদের কাছে।

ওহি নাজিল না লে; কিতাব নাজিল না লে; সে আবার কিসের রাছুল? নব্য রাছুল মানলে লেমা তাইয়্যেবা, লেমা শাহাদত তোমাদের জন্য নয়। এটা বুঝার ক্ষমতা যাদের নাই তারা মুহাম্মদ সা. উম্মত দাবী করতে পারে না।

About Fokir Owaisi

আরও দেখুন

এজিদের রক্ত বংশের অনুসারীদের খুশি উৎযাপনের মাস মহরম। পর্ব-১

এজিদের রক্ত বংশের অনুসারীদের খুশি উৎযাপনের মাস মহরম। পর্ব-১ ====================================================== ফকির উয়ায়ছী: আগামী ২১লা সেপ্টেম্বর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *